ফুড পার্ক সরানোর হুমকি, যোগগুরুর চাপে মোলায়েম যোগী

যোগগুরু রামদেবের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হলেন যোগী আদিত্যনাথ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০৪:৩৬
Share:

রামদেব। —ফাইল চিত্র।

যোগগুরু রামদেবের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হলেন যোগী আদিত্যনাথ।

Advertisement

অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই রামদেব কাঠগড়ায় তুলেছিলেন যোগীকে। গত কাল রাতে যোগগুরুর পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থা ঘোষণা করে, যোগী সরকারের অসহযোগিতায় বিরক্ত হয়ে তারা উত্তরপ্রদেশ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার মেগা ফুড পার্ক প্রকল্পটি সরিয়ে নিচ্ছে। প্যাঁচে পড়ে যোগগুরুর সামনে মাথা নোয়াতে হল যোগীকে। গত কাল রাতেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নিজে রামদেবকে ফোন করেন। যোগগুরুকে আশ্বাস দেন, ওই পার্ক তৈরির ক্ষেত্রে যেখানে যা সমস্যা রয়েছে, সব মিটিয়ে ফেলা হবে।

রামদেব-ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের খবর, যোগীর আশ্বাসে যোগগুরু সন্তুষ্ট। রামদেবের মুখপাত্র এস কে তিজারাওয়ালা আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেই রামদেব ও পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টের আচার্য বালকৃষ্ণকে ফোন করেছিলেন। তিনি সব বাধা কাটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশ্বাসে বিশ্বাস রাখি।’’

Advertisement

২০১৯-এর লোকসভা ভোটের জন্য সমর্থন চেয়ে সোমবারই রামদেবের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি অমিত। পরের দিনই পতঞ্জলি সংস্থা যোগীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয়। গ্রেটার নয়ডায় যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ৪২৫ একর জুড়ে ফুড পার্ক হওয়ার কথা। সেই প্রকল্প ভিন্ রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বালকৃষ্ণ বলেন, ‘‘শ্রীরাম ও কৃষ্ণের পবিত্র ভূমিতে এই প্রকল্প হলে হাজার হাজার মানুষ রোজগার পেতেন। লাখো কৃষক উপকৃত হতেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্যই তা হচ্ছে না।’’

যোগী শিবির বুঝতে পারে, রামদেব যা করছেন, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর বলে বলীয়ান হয়েই করছেন। দিল্লির বিজেপি নেতাদের ব্যাখ্যা, অমিতের সঙ্গে বৈঠকের পরেই প্রকাশ্যে তোপ দাগার অর্থ, মোদী-শাহকে জানিয়েই রামদেব এই পদক্ষেপ করেছেন। এবং মোদী-অমিতের সম্মতিও ছিল এতে।

চাপে পড়ে মাঠে নামতে বাধ্য হন যোগী। নিজে ফোন করেন। মন্ত্রী-আমলাদেরও নির্দেশ দেন, কোমর বেঁধে রামদেবের ক্ষোভ দূর করতে মাঠে নামুন। ‘পতঞ্জলি ফুড অ্যান্ড হার্বাল লিমিটেড’-এর এই প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারই। কিন্তু যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে শিল্পোন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তারা পতঞ্জলির হাতে জমি তুলে দেওয়ার জন্য রাজ্যের অনুমোদন পায়নি। কেন্দ্রের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের যুক্তি, পতঞ্জলিকে প্রাথমিক ছাড়পত্র দেওয়ার পর চূড়ান্ত ছাড়পত্রের শর্ত পূরণ করতে চার মাস সময় দেওয়া হয়। তার মধ্যে জমি ছিল অন্যতম শর্ত। পতঞ্জলিকে আরও এক মাস বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে।

এখন যোগীর আশ্বাস মিললেও পতঞ্জলি-কর্তাদের ক্ষোভ, ঠিক সময়ে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করলে এত দিনে ফুড পার্কে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়ে যেত। ২৫ হাজার কোটি টাকার উৎপাদন হত। সরাসরি ১০ হাজার মানুষ চাকরি পেতেন। লাভবান হতেন কয়েক লক্ষ কৃষক। পতঞ্জলির এক কর্তা বলেন, ‘‘যোগগুরু সময় ও উদ্যমের অপচয়কে পাপ বলে মনে করেন। এ ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement