পড়ুয়াদের পর এ বার জওয়ানরা। যোগের মাধ্যমে কী ভাবে কর্মস্থলে মানসিক চাপ এড়ানো সম্ভব, তা আগামিকাল বিএসএফের অফিসার-জওয়ানদের হাতে-কলমে শেখাতে নামছেন যোগগুরু রামদেব।
মাস কয়েক আগেই বিশ্বের দরবারে যোগকে তুলে ধরতে ধুমধাম করে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যোগকে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে এগিয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকও। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জন্য পাঠ্যক্রমের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। সে সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রকের পদস্থ আমলা থেকে নিচুতলার কর্মচারী— সকলের জন্য নিয়মিত যোগাসনের ফরমান জারি করেছে কেন্দ্র।
এ বার পালা কেন্দ্রীয় বাহিনীর। কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি কাটাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের জন্য যোগ শিবিরের আয়োজন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিএসএফ সূত্র জানিয়েছে, আপাতত দু’দিনের জন্য বসবে ওই যোগ শিবির। প্রথমটি হবে আগামিকাল দিল্লির বিএসএফের চাওলা ক্যাম্প সংলগ্ন দ্রোণাচার্য স্টেডিয়ামে। আর দ্বিতীয় শিবিরের আয়োজন হয়েছে গুড়গাঁওয়ে বিএসএফের ১৫০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্পে। জওয়ানদের কাছে যোগের সুফল পৌঁছে দিতে বছরভর গোটা দেশে তিরিশটি কর্মশালা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএফ। যেখানে যোগ শেখাতে উপস্থিত থাকবেন ব্রহ্মকুমারী বা রামদেবের মতো যোগ প্রশিক্ষকেরা।
কেন এই উদ্যোগ?
সমীক্ষা বলছে, অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীর মতো বিএসএফ জওয়ানদের একটি বড় অংশ মানসিক অবসাদের শিকার। মূলত অপরিচিত স্পর্শকাতর এলাকায় পোস্টিং, পরিবারের থেকে দূরে থাকা, বিপদের সময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে না পারা, ছুটির অপ্রতুলতা, যথেষ্ট বিশ্রামের অভাব, উপরওয়ালার দুর্ব্যবহার, সময়ে পদোন্নতি না হওয়ার মতো বিষয়গুলিই এই অবসাদ ডেকে আনে। কাজ করার ইচ্ছেই হারিয়ে ফেলেন সংশ্লিষ্ট জওয়ান। অনেক সময়ে তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘গত দেড়–দু’বছরে সহকর্মীদের উপরে গুলি চালানো বা জওয়ানদের আত্মহত্যার যে ক’টি ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৯৯ শতাংশ ঘটনায় দেখা গিয়েছে সংশ্লিষ্ট জওয়ান দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক অবসাদের শিকার ছিলেন।’’