এক বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের সামনে মাথা নুইয়ে, ক্ষমা চেয়ে তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে দিন ছিল গুরুপরব। কৃষি বিল প্রত্যাহার এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়াকে নিজেদের জয় বলেই সে দিন দাবি করেছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। কিন্তু এ বার কৃষক আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত জানালেন, দেশের কৃষকেরা চান না প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চান। কারণ, তাতে বিদেশে তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
টুইটারে ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর প্রধান রাকেশ টিকায়েত লেখেন, ‘আমরা চাই না, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চান। আমরা বিদেশে তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে চাই না। কৃষকদের সম্মতি ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। দিল্লি আমাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি।’ হঠাৎ টিকায়েতের এমন মন্তব্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবে ভোটের প্রচারে গিয়ে কৃষকদের কাছে ফের ক্ষমা চেয়ে তাঁদের মন জয়ের মরিয়া চেষ্টা করতে পারেন মোদী। কারণ, কৃষক আন্দোলনের জেরে বিশেষত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে বিজেপির সংগঠনে বড় ধাক্কা লেগেছে। ফলে হিন্দুত্বের তাস খেলার পাশাপাশি কৃষকদের মন জিততে ক্ষমা চাইতে পারেন সভা করে। টিকায়েত আগে থেকেই এ নিয়ে মন্তব্য করে বিজেপিকে উল্টো প্যাঁচে ফেলে দিলেন বলে মনে করছেন অনেকে।
বিকেইউ-সহ একাধিক কৃষক সংগঠন এক বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তায় বসে আন্দোলন করে তিন কৃষি বিল প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে মোদী সরকারকে। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই কয়েকটি কৃষক সংগঠন একজোট হয়ে আসন্ন পাঁচ রাজ্যের ভোটে পঞ্জাবের একাধিক আসনে লড়ার পরিকল্পনা করেছে। এ নিয়ে অস্বস্তিতে কৃষক নেতৃত্বের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে টিকায়েত জানান, ‘‘আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না। সংযুক্ত মোর্চা ভোটেও লড়বে না।
যাঁরা ভোটে লড়ছেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। আমাদেরটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়।’’ কৃষক সংগঠনগুলির একাংশের তৈরি রাজনৈতিক মঞ্চ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘১৫ জানুয়ারি আমরা আলোচনায় বসব। তখনই যা বলার বলব।’’ উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে সংযুক্ত কিসান মোর্চার অবস্থান নিয়ে টিকায়েত জানিয়েছেন, নির্বাচন বিধি চালু হওয়ার পরেই এ নিয়ে কথা বলবেন তিনি। তবে জানিয়েছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে কারা ক্ষমতায় আসবে, তা ঠিক করবেন কৃষকেরাই।’’