শ্রীনগরের বদগামে শৌর্য দিবসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি পিটিআই।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) পুনরুদ্ধার করার বার্তা ফের উঠে এল প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বয়ানে। তিনি জানিয়েছেন, এ জন্য প্রস্তাব আনা হবে সংসদে।
আজ শ্রীনগরের বদগামে শৌর্য দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ জানিয়েছেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের উপরে পাকিস্তান ক্রমাগত নির্যাতন চালাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরের একটি অংশ, যা পাকিস্তান অবৈধ ভাবে দখল করেছিল তা পুনরুদ্ধারের জন্য ১৯৯৪ সালে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল সংসদে। সেই প্রস্তাব কার্যকর করার ক্ষেত্রে ভারত বদ্ধপরিকর।’’
রাজনাথ জানান, পিওকে-র প্রতিটি বাসিন্দার জ্বালা-যন্ত্রণা অনুভব করে ভারত। সেখানকার নাগরিকদের নিয়মিত হেনস্থা করা হচ্ছে। পাকিস্তান সরকার পিওকে-তে বিদ্বেষমূলক আচরণ করছে। সেই দিন বেশি দূরে নয়, যখন অত্যাচারের বিরুদ্ধে সেখানকার বাসিন্দারাই গর্জে উঠবেন। রাজনাথের কথায়, ‘‘সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা থেকে পিওকে-র বাসিন্দারা যে বঞ্চিত সেই সম্পর্কে সচেতন আমরা।’’ গিলগিট ও বালটিস্তানের প্রসঙ্গও তুলেছেন তিনি।
এর পরেই পাকিস্তানের উদ্দেশে রাজনাথের প্রশ্ন, ‘‘পিওকে-র বাসিন্দাদের কতটা অধিকার দেওয়া হয়েছে? মানবাধিকারের প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তান কুমিরের কান্না কাঁদলেও তারা জানে পিওকে-র মানুষদের সঙ্গে তারা কী আচরণ করে।’’ সেখানকার সমস্ত অমানবিক কার্যকলাপের জন্য পাকিস্তানকেই দায় নিতে বলেও প্রতিবেশী দেশকে নিশানা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
তিনি জানান, ১৯৪৭ সালে সর্দার বল্লভভাই পটেল যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, শরণার্থীরা তাঁদের ঘরবাড়ি ফিরে পেলে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। রাজনাথের আশ্বাস, ‘‘সেই দিন আসবেই...’’ আজ পিওকে পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। রাজনাথের দাবি, ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে কাশ্মীরে শান্তি, সাফল্য, সমৃদ্ধি এসেছে। গোটা সমাজ যৌথ ভাবে এই সাফল্যের পথে হাঁটছে। রাজনাথের কথায়, ‘‘এ তো শুরু।’’ গোটা দেশের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণ সংযুক্তির ফলে কাশ্মীরের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি করছে। তাঁদের অধিকার ফিরে পেয়েছেন।
সেনা আবেগ উস্কে রাজনাথ জানান, কাশ্মীরের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনা বা অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা জঙ্গিদমনে যে পদক্ষেপ করে, তা নিয়ে অনেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন। অন্য দিকে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ, সেনা কিংবা নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের উপরে জঙ্গিদের হিংস্র আক্রমণ নেমে এলে সেই সময়ে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ দেখা যায় না বলেও কটাক্ষ করেছেন রাজনাথ।
সাম্প্রতিক কালে কাশ্মীরি পণ্ডিত, পরিযায়ী শ্রমিক-সহ বিভিন্ন মানুষের উপরে হামলার ঘটনায় উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন রাজনাথ। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৪৭ সালে অবৈধ ভাবে যারা কাশ্মীর দখলের চেষ্টা করেছিল, তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সেনার ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের ত্যাগের উল্লেখ করে ২৭ অক্টোবর তাঁদের উদ্দেশে শ্রদ্ধাও জানান।