ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা মন্ত্রিসভায় তাঁর চেয়ে বেশি কেউ জানেন না বলে দাবি করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রশ্ন উঠছে, রাজনাথ কি দাবি করলেন তিনি অমিত শাহের চেয়েও বেশি মোদী-ঘনিষ্ঠ?
আজ এক অনুষ্ঠানে সিএএ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাজনাথ বলেন, ‘‘ভারতে কখনও জাত, ধর্ম, মতবাদের ভিত্তিতে বৈষম্য করা সম্ভব নয়।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়। সে জন্য তাঁকে মাঝে মাঝে ব্যথিত হতে দেখি। মন্ত্রিসভায় সে কথা আমার চেয়ে বেশি কে জানেন?’’ এর পরেই রাজনীতিকদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কি তবে বোঝাতে চাইছেন যে তিনি মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত শাহের চেয়েও প্রধানমন্ত্রীর বেশি ঘনিষ্ঠ? এনআরসি ও দিল্লি হিংসা নিয়ে মোদী-শাহের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে যে জল্পনা শুরু হয়েছে তাতেই কি কিছুটা ইন্ধন দিলেন রাজনাথ? তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাজনাথ এ দিন মনে করিয়ে দেন, ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনিই সিএএ-র বিল তৈরি করেছিলেন। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, মোদী ও রাজনাথ একই রাজ্যে কাজ করেননি। এক সময়ে জাতীয় স্তরে রাজনাথ মোদী-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তী কালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর উপরে নির্ভর করলেও কাশ্মীর-সহ নানা বিষয়ে জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের উপরে অনেকটা নির্ভর করেছেন মোদী। অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপরে জঙ্গি হামলার পরে তা নিয়ে সরকারের অন্দরে দ্বন্দ্বের কথাও শোনা গিয়েছিল। অরুণ জেটলির মৃত্যুর পরে রাজনাথই মন্ত্রিসভায় দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। কিন্তু শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরে রাজনাথের গুরুত্ব কমেছে বলেই মনে করেন রাজনীতিকেরা। ফলে রাজনাথের এ দিনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
অন্য দিকে, ওই অনুষ্ঠানেই আজ সিএএ ও কাশ্মীর নিয়ে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বে কোনও দেশই সকলকে স্বাগত জানায় না। নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সব দেশই কিছু বিষয় বিবেচনা করে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সিএএ-র মাধ্যমে দেশহীন মানুষের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করেছি। সেটা এমন ভাবে করা হয়েছে যাতে আমরা আরও বড় বিপদে না পড়ি। এই উদ্যোগ প্রশংসিত হওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: স্থায়ী কমিটিতে দেখা মেলে না বহু সাংসদেরই
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের বর্তমান অধিকর্তা কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে একমত নন। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ভুল। আগেও তিনি ভুল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলেছে। মানবাধিকার পরিষদ সীমান্তপারের সন্ত্রাস নিয়ে এমন মনোভাব নিয়ে চলছে যেন তার সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী দেশের কোনও সম্পর্ক নেই। ’’