মেয়ের বিয়ে। তাই এক মাসের জন্য ভেলোরের জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেন রাজীব গাঁধী হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরন। ২৮ বছর ধরে জেলবন্দি নলিনী। বৃহস্পতিবার। পিটিআই
মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে এক মাসের জন্য ভেলোরের জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেন রাজীব গাঁধী হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরন।
কমলা-লাল সিল্কের শাড়ি পরে আজ জেল থেকে বেরোন নলিনী। তাঁকে ঘিরে মহিলা পুলিশের দল। ভেলোরের জেল থেকে বিশেষ ভ্যানে করে তামিলপন্থী একটি সংগঠনের নেতার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। রঙ্গপুরমের ওই বাড়িটিতেই এক মাস থাকবেন তিনি। নলিনীকে আরতি করে স্বাগত জানান তাঁর মা পদ্মা। মেয়ে হরিত্রা এখনও ব্রিটেন থেকে দেশে ফেরেননি। বিদেশে পড়াশোনা করছেন তিনি। আগামী সপ্তাহেই তিনি চলে আসছেন বলে শোনা গিয়েছে।
এ মাসের গোড়ায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের কাছে মেয়ের বিয়ের জন্য ছ’মাসের মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন নলিনী। দাবি করেছিলেন, তাঁকে ভুল শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে নলিনী বলেন, ‘‘আমি মেয়ের কোনও দেখাশোনা করতে পারিনি। মায়ের কোনও দায়িত্ব আমি পালন করতে পারিনি। বাবা মারা যাওয়ার আগে তাঁর প্রতিও কোনও কর্তব্য আমি পালন করতে পারিনি। এখন আমার মেয়ের বিয়ে। পরিবারের কাছে যেতেই হবে।’’
এর আগেও প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন নলিনী। কিন্তু এত দিনের জন্য নয়। ২০০৪ সালে ভাইয়ের বিয়েতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। গত বছর বাবা শঙ্কর নারায়ণন মারা যাওয়ার সময়ে তাঁর শেষকৃত্য করতে এক দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় নলিনীকে। এ বারে আদালতের কাছে আর্জি জানালে তাঁকে এক মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তার জন্যেও নলিনীকে এ বারে আর কোনও টাকাপয়সা দিতে হবে না। হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওঁর তেমন আর্থিক অবস্থা নয়। তাই এ ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হল। নলিনী আদালতে জানিয়েছিলেন, গত বছর তাঁর পুলিশি নিরাপত্তা বাবদ ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।
তবে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞাও চাপানো হয়েছে। যেমন, এই এক মাসে ভেলোর ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না নলিনী। কোনও রাজনীতিক বা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। নিয়ম ভাঙলেই তাঁকে জেলে ফেরত আসতে হবে। এই ৩০ দিনের প্যারোল সাজার মেয়াদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না। রায় ঘোষণার আগে বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩০ দিন মুক্তি দেওয়া যায়। সেটাই দেওয়া হয়েছে নলিনীকে।
১৯৯১ সাল থেকে গত ২৮ বছর ধরে জেলে রয়েছেন নলিনী। তাঁর স্বামী মুরুগনও একই জেলে বন্দি। রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে প্রথমে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল নলিনীর। পরে সনিয়া গাঁধীর হস্তক্ষেপে সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।