ছবি: সংগৃহীত।
রুক্ষ, শুষ্ক মরুভূমি বনাম সুজলা, নদীমাতৃক গাঙ্গেয় বঙ্গ! কিন্তু বর্ষার বৃষ্টি দেখলে উল্টো ছবিই যেন ধরা পড়ছে। গাঙ্গেয় বঙ্গে এ বার বর্ষায় (১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাভাবিকের থেকে ১০ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। সেখানে পশ্চিম রাজস্থান (যা মরু অঞ্চল বলেই পরিচিত) স্বাভাবিকের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া
অফিসের হিসেবে, ১০ শতাংশ ঘাটতি হলেও তাকে মোটের উপরে স্বাভাবিক বলা চলে। কিন্তু ২৫ শতাংশ বাড়তি বৃষ্টিকে উদ্বৃত্ত বলা হয়। মরু অঞ্চলে উদ্বৃত্ত বৃষ্টির কারণ নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে আবহবিদদের মধ্যে।
মৌসম ভবনের একাংশের ব্যাখ্যা, এ বার আরব সাগর এবং পশ্চিম ভারতে একের পর এক নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার জেরেই পশ্চিম ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই তুলনায় গাঙ্গেয় বঙ্গ তেমন জোরালো নিম্নচাপের দাক্ষিণ্য পায়নি। তাই এই তারতম্য। যদিও আবহবিদদের অনেকেরই পর্যবেক্ষণ, বৃষ্টির ধরন দেশে বদলেছে। শুধু এই বছরই নয়, গত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিম রাজস্থানে বৃষ্টির ধরনে বদল দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিক বা অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে যা মরু অঞ্চলে আগে দেখা যেত না।
পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটেরিয়োলজির গবেষণাতেও এই বদল ধরা পড়েছে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পশ্চিম ও মধ্য ভারতে বর্ষার বৃষ্টি বাড়ছে। গাণিতিক হিসেবে তা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। প্রসঙ্গত, আর এক শুষ্ক এলাকা বলে পরিচিত বিদর্ভেও এ বার মাত্র ১০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। মধ্য ভারতে বৃষ্টিও স্বাভাবিক হয়েছে।
আবহবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, এ বার বঙ্গোপাসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের অধিকাংশ ওড়িশা হয়ে ছত্তীসগঢ় এবং মধ্যপ্রদেশের দিকে চলে গিয়েছে। তার ফলে সেখানে ভাল পরিমাণে বৃষ্টি মিলেছে। রাজ্যওয়াড়ি হিসেব অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য ৪ শতাংশ বাড়তি বৃষ্টি হয়েছে। আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এর পিছনে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের অতিবৃষ্টি দায়ী। সেখানে জুন থেকে সেপ্টেম্বর, চার মাসে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে বিহারে ২৫ শতাংশ বাড়তি এবং ঝাড়খণ্ডে ১৫ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। ওড়িশায় স্বাভাবিকের থেকে মাত্র ১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।