ছবি: সংগৃহীত
আনলক পর্ব শুরু হলেও করোনা আবহে খুব তাড়াতাড়ি ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা যে প্রায় নেই তা কার্যত স্বীকার করছেন রেল কর্তারা। সংক্রমণের সংখ্যায় লাগাম টানা না-গেলে রাজ্যগুলিও লোকাল ট্রেন চালাতে দিতে রাজি নয়। সারা দেশে করোনা পরিস্থিতিতে আপাতত আইআরসিটিসি-র বিশেষ ট্রেনই যে একমাত্র ভরসা তা-ও কার্যত মানছেন রেল কর্তারা। এর মধ্যে মুম্বই-দিল্লি এবং দিল্লি-হাওড়া পথে ট্রেনের গতি বাড়ানোর পরিকল্পনা কার্যকর করার সময় আরও এগিয়ে আনায় ওই জল্পনা আরও গতি পেয়েছে।
সারা দেশে ট্রেনের সংখ্যা কম থাকার পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে নয়াদিল্লি-হাওড়া এবং নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে রেল। আগের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ওই কাজ এখন সম্পূর্ণ করতে চায় রেল। সে জন্য উত্তর রেলে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগে প্রস্তুতি শুরু করার কথা বলা হয়েছে। চলতি মাসে প্রকল্পের পর্যালোচনা করে রেলমন্ত্রী নিজে ১৬০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্প দ্রুত শেষ করার কথা বলেছেন বলে খবর।
নয়াদিল্লি-মুম্বই পথের দৈর্ঘ্য ১৩৮৪ কিলোমিটার এবং কলকাতা-নয়াদিল্লি পথের দৈর্ঘ্য ১৪৫০ কিলোমিটার। দু’ক্ষেত্রেই ট্রেনের গতি বাড়াতে ট্র্যাক এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থায় বদল ছাড়াও লেভেল ক্রসিং তুলে দেওয়া এবং নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় রেল লাইনের ধারে বেড়া দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। ট্র্যাকের ত্রুটি পরীক্ষা করার জন্য যান্ত্রিক ব্যবস্থাও চালু হওয়ার কথা। দিল্লি এবং মুম্বই রুটে প্রাক-করোনা পরিস্থিতিতে ৯০টি যাত্রী মেল এক্সপ্রেস ট্রেন এবং সমসংখ্যক মাল গাড়ি চলত। দিল্লি-হাওড়া রুটে ১২০টি যাত্রিবাহী ট্রেন ও ১০০টি মাল গাড়ি চলত। করোনা আবহে ট্রেনের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটাই কম। ফলে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঝক্কি আগের থেকে এখন অনেকটাই কম। এর আগে এই দুই রুটে রাজধানী এক্সপ্রেসের গতি বাড়াতে ট্রেনের সামনে পিছনে জোড়া ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা হয়েছে। তাতে ট্রেনের গড় গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত যাত্রা পথে সময় সাশ্রয় হয়েছে। এখন ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন গেলে যাত্রাপথে আরও কয়েক ঘণ্টা বাঁচবে। বেসরকারি ট্রেনকে এই রুটগুলোতে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ছোটানোর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়। ফলে টিকিটের চাহিদা আছে, এমন রুটে বেসরকারি ট্রেনের কথা মাথায় রেখেই রেলের এমন তৎপরতা বলে মত রেল কর্মী ইউনিয়নের একাংশের।
আরও পড়ুন: মৃত্যু ৫০ হাজার ছুঁইছুঁই, মোদীর টিকা-আশ্বাস
তাদের অভিযোগ, বেসরকারি ট্রেনকে কম সময়ে যাতায়াতের জন্য উন্নত পরিকাঠামো দেওয়ার তৎপরতাই প্রধান হয়েছে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে।