সুরেশ প্রভু।—ফাইল চিত্র।
একের পর এক রেল দুর্ঘটনার জেরে কিছুক্ষণ আগেই ইস্তফা দিয়েছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে মিত্তল। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। রেলমন্ত্রীর ইস্তফা নেবেন না, এমন কথা বলেননি নরেন্দ্র মোদী। প্রভুকে তিনি বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন’। আর সেই মন্তব্যই আলোড়ন ফেলেছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে।
ক্যাবিনেট সচিবালয় সূত্র বলছে, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই মন্ত্রিসভার রদবদল হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ কিরগিজস্তান সফরে গিয়েছেন। তিনি ২৫ অগস্ট ফিরবেন। তার পরেই রদবদল হবে মন্ত্রিসভায়। তখন প্রভুর মন্ত্রক পাল্টাতে পারে বলেই মনে করছেন রেল মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ। তাঁকে পাঠানো হতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে। মনোহর পর্রীকর গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে চলে যাওয়ার পরে যে মন্ত্রক সামলাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। অরুণকে অর্থ মন্ত্রক বা সুষমা বা রাজনাথকে বিদেশ ও স্বরাষ্ট্র থেকে সরানোর সম্ভাবনা কম বলেই অনেকের অভিমত।
বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, রেলের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বর্তমানে ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিন্হাকে। সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ ওই নেতাকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন মোদী। মনোজ যদি এখন পুরোদস্তুর রেলমন্ত্রী হন, তা হলে তিনি যোগী আদিত্যনাথকে চাপের মুখে রাখতে পারবেন।
তবে রেলমন্ত্রী হিসাবে পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর নামও উঠে এসেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই রেল মন্ত্রক পেতে ইচ্ছুক। তা ছাড়া, সে ক্ষেত্রে সড়ক ও রেলকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। শুরু থেকেই ওই দু’টি মন্ত্রককে এক করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের।
রেলমন্ত্রীর কুর্শির দিকে নজর আছে নীতীশ কুমারেরও। ঘনিষ্ঠ কোনও নেতার জন্য ওই মন্ত্রক চাইছেন তিনি। এনডিএ-তে আসার শর্ত হিসাবে নীতীশ একটি পূর্ণমন্ত্রী ও একটি প্রতিমন্ত্রীর পদ দাবি করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর শরিককে দিতে রাজি হবেন কি না, সেটা দেখার।
সুরেশ প্রভুর ঘনিষ্ঠরা অবশ্য এখনও পুরোপুরি আশা ছেড়ে দেননি। কারণ, বিজেপির একটি সূত্র বলেছে, বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রভুর ইস্তফা চেয়ে সরব হয়েছে। এখন তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করলে সেটা বিরোধীদের জয় হিসেবেই গণ্য হবে। ভবিষ্যতেও রেল দুর্ঘটনা ঘটলেই রেলমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি তুলবে তারা। ফলে প্রভুর ইস্তফা গ্রহণ করা সরকারের উচিত হবে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই নেতারা।
মন্ত্রিসভার রদবদলে গিরিরাজ সিংহ, রাজীব প্রতাপ রুডির মতো নেতারা বাদ পড়তে পারেন বলে জল্পনা। বলা হচ্ছে, জেডিইউ-কে জায়গা দিতেই এঁদের সরানো হচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, আসল কারণটা দুর্নীতি।