শুধু জাপানি প্রযুক্তিই নয়, জাপানি সংস্কৃতিও এ বার ভারতের বুলেট ট্রেনে। আর তাই আমদাবাদ-মুম্বই বুলেট ট্রেনের দু’ঘণ্টার সফরে এক সেকেন্ড দেরিতেও যাত্রীদের কাছে লিখিত ক্ষমা চাইবেন বুলেট ট্রেন কর্তৃপক্ষ।
এ দেশে ট্রেন লেট নিত্যদিনের ঘটনা। রাজধানীর মতো ট্রেনও প্রতিদিন দেরিতে চলে। ভারতীয় রেলের সময়ে চলার হার যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ, জাপানে বুলেট ট্রেন গত ৫০ বছরে সব মিলিয়ে দেরি করেছে ১ মিনিটের সামান্য কিছু বেশি। জাপানের সময়ে চলার সংস্কৃতি এ বার দেশীয় বুলেট ট্রেনে আনতে চায় ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন (এনএইচএসআরসি)।
জাপানি ঋণ ও জাপানি প্রযুক্তিতে এ দেশে বুলেট ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ট্রেন চালানো শেখাতে বডোদরায় বুলেট ট্রেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ জোর কদমে শুরু করেছে এনএইচএসআরসি। ২০২০ সালের মধ্যে প্রথম পর্বের কাজ শেষ হবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২২-২৩ সালের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালু হয়ে যাবে। ট্রেন চালানো, স্টেশন ও সিগন্যালিং ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৩৫০০ দক্ষ কর্মী প্রয়োজন হবে। এঁদের মধ্যে ১৫০০ জনকে জাপানে প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে। বাকিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বডোদরা কেন্দ্রে।
প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সময়ে ট্রেন পরিচালনার জন্য বিশেষ শিক্ষা মডিউল রাখা হয়েছে। জাপানে দু’বছরের প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা অফিসার রাকেশ অবস্থি জানান, “এক সেকেন্ডেরও যে দাম আছে, সেই মানসিকতা গড়ে তোলা হবে অফিসারদের মধ্যে।” তিনি জানান, জাপানে বুলেট ট্রেন কয়েক সেকেন্ড দেরি হলে কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে ক্ষমা চান। সেই সংস্কৃতি বুলেট ট্রেনেও শুরু করতে চাইছে এনএইচএসআরসি।
চালকেরা যাতে আসল বুলেট ট্রেন চালানোর আগে হাত পাকাতে পারেন, তাই সিমুলেটর বসানো হচ্ছে বডোদরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। খরচ ৫০ কোটি টাকা। মুখ্য প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রদীপ আহিরকর জানান, “ওই সিমুলেটরে বসে সরাসরি বুলেট ট্রেন চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন চালকেরা।” জাপানে এখন ই-৭ মডেলের বুলেট ট্রেন চলে। আহিরকর জানান, “ওই ধরনের বুলেট ট্রেনের নাক লম্বা হওয়ায় বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণ কম হয়।’’ প্রশিক্ষণের জন্য ওই ধাঁচের সিমুলেটরই আনছে এনএইচএসআরসি।