ফাইল চিত্র।
মন্ত্রী হয়েই তিনি বিভিন্ন ডিভিশনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিকাঠামোর বাস্তব চেহারা আর যাত্রী-ক্ষোভের কারণগুলো বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর মতে, রেল কর্তাদের একাংশ বিভিন্ন বৈঠকে যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তাতে ‘জল মেশানো’ রয়েছে।
নতুন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল রেল-প্রশাসনকে ঢেলে সেজে ট্রেন চলাচলে গতি আনতে চান। তাই প্রতিটি ডিভিশনকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রেলমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে রেলের ৬৮টি ডিভিশনে অতিরিক্ত এডিআরএম (অ্যাডিশনাল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দৈনন্দিন ট্রেন চলাচল ও প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখভালের জন্যই এই নিয়োগ, জানিয়েছে রেল বোর্ড।
বিজ্ঞপ্তি জারি করে বোর্ড জানিয়েছেন, শিয়ালদহ, হাওড়া, দিল্লি, চেন্নাই, মুঘলসরাই-সহ দেশের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনে তিন জন করে এডিআরএম থাকবেন। বাকি ৫৬টি স্টেশনে থাকবেন দু’জন করে। যে সব স্টেশনে কম সংখ্যক এডিআরএম আছেন, সেখানে অতিরিক্ত এডিআরএম পাঠানো হবে। এই হিসেবে হাওড়াতে দু’জন এবং শিয়ালদহে এক জন এডিআরএম আসছেন।
যেখানে তিন জন এডিআরএম থাকবেন, সেখানে তাঁদের কী দায়িত্ব থাকবে? বলা হয়েছে, এডিআরএম (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) দেখবেন রেলওয়ে ইউনিয়ন, কর্মীদের মেডিক্যাল, জনসংযোগ, জনতার অভিযোগ, ক্যান্টিন, প্রোটোকল, ভিজিল্যান্স, সাধারণ প্রশাসন, স্টোর, অর্থ ও কর্মচারী কল্যাণ। এডিআরএম (টেকনিক্যাল) দেখবেন সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও সিগন্যাল-টেলিকম বিভাগ। এডিআরএম (অর্গ্যানাইজেশন) দেখবেন ট্রাফিক অপারেশন, কমার্শিয়াল অপারেশন, তথ্য প্রযুক্তি, যাত্রী নিরাপত্তা, সময়ানুবর্তিতা ও আরপিএফ-এর কাজকর্ম।
প্রশ্ন উঠেছে, বিভিন্ন স্টেশনে দু’তিন জন অফিসার বাড়িয়ে কি রেল-পরিষেবার উন্নতি করা যাবে? নাকি মন্ত্রীর এই পদক্ষেপ শুধুই লোক দেখানো? রেলকর্মীদের একাংশের মতে, নিচুতলায় বহু পদ খালি রয়েছে। তা না করে মাথা ভারি করা হচ্ছে। এই মাথাভারি প্রশাসন দিয়ে কাজের কাজ কিছুই হবে না। রেলকর্তাদের একাংশ মনে করেন, রেলের মূল সমস্যা হলো পরিকাঠামোর অভাব। তাঁদের দাবি, গত ৬৫ বছরে নতুন লাইন বেড়েছে ২৩%। আর এই সময়ে বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠীর সৌজন্যে ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে ২৫০%!
তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটা বদলাচ্ছে না। আর এই তথ্যই প্রমাণ করে রেল প্রশাসনের সদিচ্ছা কতটা!
মন্ত্রীর অবশ্য দাওয়াই, রেলের টাইমটেবিলে পরিবর্তন করা হোক। মালগাড়ি ও যাত্রিবাহী ট্রেন পৃথক সময়ে চালানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর শীতকালে ট্রেন চালানোর সময়ে উচ্চ ক্ষমতার ‘ফগ লাইট’ লাগানো হোক ইঞ্জিনে। এতে দেরি এবং দুর্ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যাবে।