ভাবনার আদানপ্রদানের জন্য এ বার গোটা দেশের শিক্ষা জগতের মানুষ ও বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। শনিবার দিল্লির সিরি ফোর্ট প্রেক্ষাগৃহে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কলেজের শিক্ষক-অধ্যাপকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে তাঁর নিজের চিন্তাভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি বিশিষ্টজনেরা নরেন্দ্র মোদী সরকার ও কংগ্রেস নিয়ে কী ভাবছেন, তা বুঝতে চান রাহুল।
কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, মোদী সরকারের আমলে শিক্ষা জগতের গৈরিকীকরণের চেষ্টা যেমন হয়েছে, তেমন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বারবার আওয়াজ উঠেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকেই। আবার ক্যাম্পাসে বিজেপি-আরএসএসের নীতি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ হলে, তাকে কঠোর ভাবে দমনের চেষ্টাও হয়েছে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিত ভেমুলার মৃত্যু থেকে দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কানহাইয়া কুমারদের দেশদ্রোহের অভিযোগে কাঠগড়ায় তোলাই তার প্রমাণ। কিন্তু কংগ্রেসের সামনে মুশকিল হল, কংগ্রেসি বুদ্ধিজীবী বা শিক্ষাবিদ বলে আলাদা কোনও শ্রেণি তৈরি হয়নি। মোদী সরকারের গেরুয়া-নীতির বিরুদ্ধে সরব শিক্ষাবিদরা বামপন্থী বলেই পরিচিত থেকেছেন।
রাহুলের কংগ্রেস দলিত, কৃষক, সংখ্যলঘু, মহিলাদের স্বার্থরক্ষা ও অধিকার আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলনের পাশে থাকছে। সমাজের প্রতিটি অংশের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের উদার চিন্তাধারার সঙ্গে শিক্ষা জগতের যাঁরা নিজেদের মেলাতে পারবেন, তাঁদের পুরোপুরি পাশে টানাই রাহুলের উদ্দেশ্য। আরও একটি কারণে এটা জরুরি মনে করছে কংগ্রেস। তা হল আরএসএসের নয়া উদারপন্থী হিন্দুত্বের মোকাবিলা।
চলতি সপ্তাহেই সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত তিন দিন ধরে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের কাছে আরএসএসের মতাদর্শ ব্যাখ্যা করেছেন। গোঁড়ামির বদলে উদারপন্থী ভাবনা মেলে ধরার চেষ্টা করেছেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘ভাগবত যখন আরএসএস-কে উদারপন্থী হিসেবে দেখাতে চাইছেন, তখন নেহরুর চিন্তাধারা নতুন করে তুলে ধরাটা আরও বেশি জরুরি।’’ শনিবারের বৈঠকের আমন্ত্রণপত্রে তাই নেহরুকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ হল মানবতাবাদ, সহিষ্ণুতা, যুক্তি, চিন্তাভাবনার অভিযান এবং সত্যের খোঁজ।