বছর শেষে ছুটি নয়, রাহুল ব্যস্ত দল নিয়ে

বছর শেষে রাহুলের এই সক্রিয়তা দেখে বিস্মিত বিজেপি। মাঝে মাঝে ছুটি নেওয়ার কারণে এত দিন তারা এই বলে বিঁধে এসেছে যে, রাহুল আদৌ ‘ফুলটাইম’ রাজনীতিক নন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০১
Share:

রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

বছর শেষের ক’টা দিন ছুটি না কাটিয়ে দলের কাজেই ব্যস্ত রাহুল গাঁধী।

Advertisement

দলের সভাপতি হওয়ার পরে আগামিকালই প্রথম কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাদিবসে দিল্লিতে এআইসিসি দফতরে পতাকা তুলবেন রাহুল। পরশু হিমাচলপ্রদেশে গিয়ে দলের হারের পর্যালোচনা করে সে রাজ্যে সংগঠনের রাশ নিজের হাতে তুলে নেবেন। বীরভদ্র সিংহের দাপটে এত দিন যা সম্ভব হয়নি।

বছর শেষে রাহুলের এই সক্রিয়তা দেখে বিস্মিত বিজেপি। মাঝে মাঝে ছুটি নেওয়ার কারণে এত দিন তারা এই বলে বিঁধে এসেছে যে, রাহুল আদৌ ‘ফুলটাইম’ রাজনীতিক নন। মনে করা হচ্ছে, রাহুল অনুপস্থিত থাকবেন ধরে নিয়েই সম্ভবত ১ জানুয়ারি সংসদ খোলা রেখেছে সরকার। সে দিন তিনি আসেন কি না, তা দেখতে কার্যত ওত পেতে রয়েছেন বিজেপির নেতারা।

Advertisement

প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে প্রতি বারই সেজে ওঠে কংগ্রেস দফতর। এ বার যেন জাঁকজমক তুলনায় বেশি। আগামী দিনে দল কোন পথে হাঁটবে, তার দিশা দেবেন নতুন সভাপতি। পরশু রাহুল যাচ্ছেন হিমাচলে। যেখানে আজই নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। ভোটে বিজেপির অনায়াস জয়ের পর আজ সেখানে রোড-শো করে দলের পক্ষে আরও হাওয়া তোলার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস নেতারা জানাচ্ছেন, রাহুলের এই হিমাচল সফরের লক্ষ্য ভিন্ন।

দলীয় সূত্রের বক্তব্য, ‘রাজাসাহেব’ বীরভদ্র এত দিন হিমাচলের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নাক গলাতে দেননি। রাহুল যেমন পঞ্জাবে অমরেন্দ্র সিংহের উপরে ভরসা রেখেছিলেন, তেমনই হিমাচল ছেড়ে দিয়েছিলেন বীরভদ্রের উপরে। কিন্তু বীরভদ্র ফল দেখাতে পারেননি। তাঁকে ঘিরে প্রদেশ কংগ্রেসে তীব্র অসন্তোষ আছে। রয়েছে তীব্র গোষ্ঠী কোন্দলও। রাহুল এ বারে রাজ্যের রাশ নিজের হাতে নেবেন। যাতে ঠিক গুজরাতের মতো হিমাচলেও দলের সাংগঠনিক শক্তির সফল প্রয়োগ করা যায় আগামী দিনে। বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত নেতাদের একজোট করে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যেই বিজেপির বিজয়রথ ৯৯-এ থমকে দিয়েছেন রাহুল। হিমাচলে নতুন সরকার যখন সবে কাজ করতে শুরু করছে, সেই সময়েই তিনি সে রাজ্যে গিয়ে দলের ভিত শক্ত করে আসতে চান।

রাহুলের এই সক্রিয়তা দেখে বিজেপি নেতারাও তৎপর হয়ে উঠেছেন। সামনে কর্নাটকের ভোট। সে কথা মাথায় রেখে বছরের শেষ দিনটিতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ যাচ্ছেন বেঙ্গালুরুতে। জানুয়ারির শেষে নরেন্দ্র মোদীর সফরও চূড়ান্ত হয়েছে। কংগ্রেস নেতারাও জানুয়ারির গোড়ার দিকে রাহুলের কর্নাটক সফরের কর্মসূচি তৈরি করছেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ফের কর্নাটক জিতে তিনি নতুন সভাপতিকে উপহার দেবেন।

তা হলে কী বছর শেষে ছুটিতে যাচ্ছেনই না রাহুল? দলের এক সূত্র জানাচ্ছে, এখনও তেমন পরিকল্পনার খবর নেই। কংগ্রেসের অনেকেই মনে করছেন, লেগে থেকে গুজরাতে ভাল ফল করার পরে রাহুল এখন ছুটিতে গেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। তবে সনিয়া গাঁধী ছুটিতে কোথাও গেলে তাঁকে দিয়ে আসতে বা আনতে যেতে পারেন। বিজেপি নেতারা দেখতে চান আগামী ১ জানুয়ারি রাহুল সংসদে আসেন কি না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement