Rahul-Gandhi

১০০ দিনের কাজ ও ন্যায়ে জোর রাহুলের

বিজেপির কটাক্ষ ছিল, কোথা থেকে টাকা আসবে, তা না-বলে শুধু ভোট-বাক্সের দিকে তাকিয়ে ওই ঘোষণা করেছেন রাহুল। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০৬:০২
Share:

—ফাইল চিত্র।

দেশে বেকারত্বের হার চড়া। কাজের আকাল শহর এবং গ্রামে। সংসার চালাতে সমস্যায় বহু দরিদ্র পরিবার। এই অবস্থায় কিছুটা সুরাহা দিতে কেন্দ্রকে একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে আরও জোর দেওয়ার আর্জি জানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। ফের দাবি তুললেন দরিদ্রদের হাতে ন্যূনতম আয় তুলে দেওয়ার প্রকল্প ‘ন্যায়’ চালু করার। তবে সরকার সে কথায় আদৌ কতটা কান দেবে, তা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার রাহুলের টুইট, “ভারতে বেকারত্বের কামড়ে জর্জরিতদের জন্য এমজিএনআরইজিএ-র (একশো দিনের কাজ) মতো প্রকল্প আর সারা দেশের গরিবগুর্বোদের জন্য ‘ন্যায়’ (প্রকল্প) চালু করা জরুরি। তা অর্থনীতির পক্ষেও ভাল হবে। সুট-বুট-লুটের সরকার কি দরিদ্রদের যন্ত্রণা বুঝতে পারবে?”

২০১৪ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসার পরে খাস সংসদে দাঁড়িয়ে একশো দিনের কাজকে ‘গর্ত খোঁড়ার প্রকল্প’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করেছিলেন, স্বাধীনতার পরে সাত দশক পেরিয়েও এ ধরনের প্রকল্প চালাতে হওয়াটা ইউপিএ জমানা তথা দীর্ঘ কংগ্রেস শাসনের জলজ্যান্ত উদাহরণ। কিন্তু করোনার কামড়ে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সেই একশো দিনের কাজের উপরেই অনেকখানি ভরসা করতে হয়েছে মোদী সরকারকে।

Advertisement

লকডাউনের জেরে কাজ-হারানোদের কথা মাথায় রেখে ত্রাণ প্রকল্পে একশো দিনের কাজে বাড়তি বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। পরে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে যে গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনা চালুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তা-ও সেই গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়াতে কিছুটা একশো দিনের কাজের মতোই প্রকল্প। এমনকি অনেকে বলেছেন, বেকারত্বের ক্ষতে প্রলেপ দিতে ওই ধাঁচের প্রকল্প চালু হওয়া উচিত শহরেও। এ নিয়ে বিঁধতে ছাড়েনি কংগ্রেস। তারা মনে করিয়ে দিয়েছে, যে প্রকল্পকে প্রধানমন্ত্রী বিদ্রুপ করেছিলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তার উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে তাঁকে।

এ দিনও নিজের টুইটের সঙ্গে একটি লেখচিত্র ব্যবহার করেছেন রাহুল। সেখানে দেখিয়েছেন, অর্থনীতি গভীর গর্তে পড়া ইস্তক কী ভাবে বেড়েছে একশো দিনের কাজের চাহিদা। ওই প্রকল্পে জোর দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

এর পাশাপাশিই ‘ন্যায়’ প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনেছেন রাহুল। গত লোকসভা ভোটে রাহুলের নেতৃত্বে লড়ার সময়ে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি ছিল, নির্বাচনে জিতে এলে দেশের সব থেকে দরিদ্র ২০% পরিবারকে ন্যূনতম আয় হিসেবে মাসে ৬০০০ টাকা অর্থাৎ বছরে ৭২,০০০ টাকা করে দেবে তাদের সরকার। দাবি ছিল, তেমন ৫ কোটি পরিবারের ২৫ কোটি সদস্যকে ওই টাকা জোগাতে ফি-বছর সরকারকে তুলে রাখতে হবে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু তার জন্য মধ্যবিত্তদের উপরে করের বোঝা বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।

বিজেপির কটাক্ষ ছিল, কোথা থেকে টাকা আসবে, তা না-বলে শুধু ভোট-বাক্সের দিকে তাকিয়ে ওই ঘোষণা করেছেন রাহুল। সেই কটাক্ষ এবং নির্বাচনে হারের পরেও ‘ন্যায়’-এর গুরুত্বের দাবি থেকে সরে আসেননি রাহুল। এমনকি লকডাউন শুরুর পরেও বারবার দাবি তুলেছেন ওই জাতীয় প্রকল্প চালু করার। চরম দুর্দশাগ্রস্ত পরিযায়ী শ্রমিক, কাজ-হারানো কর্মী-সহ দরিদ্রদের দুরবস্থা দূর করতে যখন বহু প্রথম সারির অর্থনীতিবিদ তাঁদের হাতে নগদ জোগানোর কথা বলেছেন, তখনও ‘ন্যায়’ প্রকল্পের জন্য সওয়াল করে গিয়েছে কংগ্রেস। এ দিনের টুইটে ফের সেই দাবি তুলে রাহুল মনে করিয়ে দিলেন, একশো দিনের কাজ আর ন্যূনতম আয়ের দৌলতে চাহিদা চাঙ্গা হলে, তাতে লাভ অর্থনীতিরও। যদিও ‘সুট-বুট-লুটের সরকার’ তা শুনবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement