কাছাকাছি: প্রথমে সহারনপুরে ঢুকতে বাধা পেয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত দলিতদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন রাহুল গাঁধী। শনিবার সহারনপুরের শাহজহাঁপুর চৌকিতে। ছবি: পিটিআই।
মোদী সরকারের ৩ বছর পূর্তি উদ্যাপনে অনেকটাই জল ঢেলে দিয়েছে সহারনপুরের দলিত বিক্ষোভ। সরকারের জন্মদিন পালনের আবহে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জর্জরিত সহারনপুরে গিয়ে বিজেপির ‘দলিত’ অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। ক্ষতিগ্রস্ত দলিতদের পাশে দাঁড়িয়ে খুঁচিয়ে তুললেন দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার প্রসঙ্গ। গুজরাত-হরিয়ানায় দলিতদের উপর স্বঘোষিত গোরক্ষকদের হামলার কথা না তুলেও, দলিতরা যে মোদীর শাসনে ধারাবাহিক ভাবে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন, সেই অভিযোগে আজ সরব হন রাহুল। লক্ষ্য, দলিতদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া। মোদীকে আক্রমণ করে দলিত-আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়া।
অখিলেশ যাদবকে সহারনপুরের সব্বীরপুর গ্রামে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি যোগী-প্রশাসন। তাঁকেও যে ঠেকানো হবে, কংগ্রেস সহসভাপতির তা বিলক্ষণ জানতেন। তবু তিনি আজ হরিয়ানার দিক থেকে সহারনপুরে ঢোকার চেষ্টা করে ঠাকুর-দলিত সংঘর্ষের দিকে নজর ফেরালেন জাতীয় রাজনীতির। রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা রাহুলকে ‘ট্র্যাজেডি ট্যুরিস্ট’ বলে কটাক্ষ করলেও যোগী সরকার যে সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে, কেন্দ্রের কাছেও তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন:আপাতত দু’দিকেই থাকতে চান নীতীশ
দলের বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদ ও রাজ বব্বরকে সঙ্গী করে রাহুল সহারনপুরের দিকে এগোতেই পথে তাঁদের আটকে দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময় হয়। পরে রাহুল টুইট করেন, ‘‘প্রশাসন আটকানোর চেষ্টা করলে আমি হেঁটে সহারনপুরের শাহজহাঁপুরে গিয়ে পীড়িত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ বাদল নামে এক দলিত বালকের সঙ্গে রাহুলকে কথা বলতেও দেখা যায়। এর পরে পুলিশের আপত্তিতে সেখান থেকে ফিরে আসেন তিনি। রাহুল বলেন, ‘‘প্রশাসনিক কারণে এখন ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই আমি এখানে আসতে পারব বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশকর্তারা।’’
সহারনপুরে রাজপুত-দলিত সংঘাতের শুরু যোগী সরকার আসার পরেই। দলিতদের অভিযোগ, ঠাকুররা ছক কষে মহারাণা প্রতাপের জন্মদিন থেকে তাদের উপর হামলা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ঠাকুর বাহিনীর হাতে মারা গিয়েছেন ৫ জন দলিত। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটি আরও বেশি। অস্বস্তিতে পড়ে যোগী সরকার জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ দুই আমলাকে বদলি করলেও পরিস্থিতির উন্নতি বিশেষ হয়নি। কংগ্রেসের বক্তব্য, সহারনপুর কোনও ব্যতিক্রম নয়, গত তিন বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দলিত অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। দলিত-আদিবাসী ভোট ফিরে পেতে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে রাহুলের দল। ইউপিএ জমানায় দলিতদের স্বার্থরক্ষায় যে সব পদক্ষেপ করা হয়েছে তা নিয়ে প্রচারও চালাবে।