রাহুল গান্ধী। ফাইল চিত্র।
সাংসদ-পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু লড়াই তাতে থেমে থাকছে না। এই বার্তা নিয়েই তাঁর সদ্য ‘প্রাক্তন’ লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাড়ে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী।
তবে রাহুল ওয়েনাড়ে পা রাখার আগেই কেরলের এই পাহাড়ি কেন্দ্রে বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে। ওয়েনাড় জেলার সদর কালপেট্টায় রাহুলের সাংসদ কার্যালয় রয়েছে কয়েক বছর ধরেই। নিজে যাওয়ার আগে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের মানুষের উদ্দেশে বার্তা পাঠিয়েছিলেন রাহুল। সেই বার্তা চিঠির আকারে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া এবং হোয়াটস্অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। সাংসদ কার্যালয় থেকে তারই কাজ চলছিল। দু’দিন আগে আচমকাই সেই কার্যালয়ের ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলার কংগ্রেস নেতৃত্ব যোগাযোগ করার পরে তাঁদের শুনতে হয়েছে, সাংসদই নেই যখন, তাঁর কার্যালয়ের সংযোগ রেখে কী হবে! কংগ্রেস নেতাদের পাল্টা বক্তব্য, ফোন এবং ইন্টারনেটের বিল যত ক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তত ক্ষণ সংযোগ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক!
কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্রীয় টেলি-যোগাযোগ মন্ত্রকের নির্দেশেই বিএসএনএল এমন পদক্ষেপ করেছে। কোঢ়িকোডের নেতা এবং কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি টি সিদ্দিকীর প্রশ্ন, ‘‘সাংসদ-পদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার দু’বছর পরেও দিল্লিতে গুলাম নবি আজ়াদের বাংলো রয়ে গিয়েছে। কারণ, তিনি রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করেছেন! আর রাহুল যে হেতু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও আদানিদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাই তাঁর বাংলো রাতারাতি ছেড়ে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। তার পরে সাংসদ কার্যালয়কেও অকেজো করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। গণতন্ত্রের এমনই হাল করেছে বিজেপি!’’ কেরলের বাম নেতৃত্বও এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। বিজেপির কেরল রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন অবশ্য ‘সরকারি বা প্রশাসনিক বিষয়’ আখ্যা দিয়ে সংযোগ ছিন্নের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এই বিতর্কের মধ্যেই কাল, মঙ্গলবার ওয়েনাড়ে পৌঁছনোর কথা প্রাক্তন সাংসদ রাহুলের। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট ইউডিএফ সে দিন রাহুলকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বড়সড় পরিকল্পনা করেছে। সূত্রের খবর, কালপেট্টায় রোড-শো হতে পারে রাহুলের। পরে কালপেট্টায় ওই সাংসদ কার্যালয়ের সামনেই জনসভা হওয়ার কথা। সেখানে থাকার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরণ-সহ দলের রাজ্য নেতৃত্বের।
রাহুলের এই সফরকে ঘিরে যাবতীয় আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইউডিএফের ওয়েনাড় জেলা নেতৃত্বকে। সংলগ্ন তিন জেলা ওয়েনাড়, কোঢ়িকোড এবং মলপ্পুরম থেকে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন রাহুলের কর্মসূচিতে। কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের আসতে বলা হচ্ছে কাসারগোড়, কান্নুর এবং পালাক্কাড জেলা থেকেও। রাহুলের সভার আগেই তাঁর বার্তা ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় নেমেছে কংগ্রেস। ওই বার্তায় রাহুল বলেছেন, আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই জারি থাকবে। সাংসদ না থাকলেও সেই লড়াইয়ে কোনও ছেদ পড়বে না। আর ওয়েনাড়ের মানুষের যে কোনও সমস্যারও মোকাবিলা হবে যৌথ ভাবে।