ফাইল চিত্র।
মঞ্চের উপরে এক ছাত্রী বসে। সাত-আটজন মিলে তাঁকে ঠেলে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। পাশে দাঁড়িয়ে রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস নেতা নন। তখন তিনি জাপানি মার্শাল আর্ট আইকিডো গুরু। কিন্তু কংগ্রেসের কথা ভোলেন কী করে? কোচির সেন্ট টেরেজা কলেজের পড়ুয়াদের সামনে রাহুল মজা করেই বললেন, “এই দেখুন, আপনাদের কংগ্রেস পার্টি দেখাচ্ছি!”
রাহুলের আইকিডো-র নির্দেশে ছাত্রীটি এমন ভাবে বসলেন যে সাত-আট জন মিলেও তাঁকে নড়াতো পারল না। রাহুল বললেন, ‘‘আইকিডো-র মন্ত্রই জীবনের মন্ত্র। আপনি নিজেকে সঠিক অবস্থানে রাখলে ভিতরে অসীম শক্তি ভর করে।’’
রাহুলের কথার সুর ধরেই তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতা সোমবার বললেন, আইকিডো-র মন্ত্র রাজনীতিরও মন্ত্র। কেরলে কংগ্রেস বামেদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সেই অবস্থান মেনেই রাহুল এখনই বাংলায় ভোটের প্রচারে যেতে চাইছেন না। কারণ সেখানে কংগ্রেস ও বাম একই মেরুতে। রাহুলের সমস্যা রয়েছে বলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা আপাতত প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে প্রচারে চাইছেন। প্রিয়ঙ্কা অসমে দু’বার প্রচারে গিয়েছেন। তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা দেখে কংগ্রেস প্রিয়ঙ্কাকে বাংলায় প্রচারে চাইছেন।
ফেব্রুয়ারির শেষে চার দিন কেরলে কাটানোর পরে সোমবার থেকে রাহুল গাঁধী ফের দু’দিনের জন্য দক্ষিণের রাজ্যে ভোট প্রচারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তিনি কবে প্রচারে যাবেন, বা আদৌ যাবেন কি না— তার কোনও খবর নেই। রাহুলের ঘনিষ্ঠ শিবির সোমবার জানিয়েছে, রাহুল পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে যাবেন। তবে ৬ এপ্রিল কেরলের ভোটের পরে। কেরলের ভোট মিটে গেলেই রাহুলের পশ্চিমবঙ্গের সফরসূচি ঘোষণা হবে।
আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “সনিয়া, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর মতো কংগ্রেসের শীর্ষ নেতানেত্রীরা পশ্চিমবঙ্গে প্রচার করবেন। সব চূড়ান্ত হলেই তাঁদের সফরসূচি ঘোষণা করা হবে।” এখনই বাংলায় যাওয়ার ‘সমস্যা’ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ‘টিম রাহুল’-এর কথা হয়েছে। রাহুল কেরলের সাংসদ। সেখানে কংগ্রেস বাম সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছে। অন্য দিকে বাংলায় কংগ্রেস-বাম জোট। রাহুল দুই রাজ্যে একই সঙ্গে দু’রকম অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চান না।
তাঁর বদলে রাজ্যের নেতারা প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে চাইলে রাহুলের সমস্যা হবে না তো? আজ কোচির কলেজ ছাত্রীদের আইকিডো শিখিয়ে রাহুলের মন্তব্য, মেয়েরা কোনও ভাবেই ছেলেদের থেকে দুর্বল নয়। বরং বেশি শক্তিশালী। অথচ সমাজ বোঝাতে চায়, মেয়েদের শক্তি কম।