—ফাইল চিত্র
দু’মাস নয়! দু’বছর পরে? আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে নয়। ২০২২-এর ডিসেম্বরে রাহুল গাঁধী ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফিরতে পারেন বলে দলের অন্দরমহলে জল্পনা চলছে। গত শনিবার সনিয়া গাঁধীর ডাকে কংগ্রেসের বৈঠকে রাহুল বলেছিলেন, তিনি যে কোনও দায়িত্ব পালনে রাজি। একইসঙ্গে অবশ্য মন্তব্য করেছিলেন, কোনও পদ গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওই বৈঠকে হাজির কংগ্রেস নেতাদের ধারণা, গত লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে পদত্যাগ করা রাহুল এখনই সভাপতির পদে ফিরতে নারাজ। ২০২২-এর ডিসেম্বরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে তিনি দায়িত্ব নিতে পারেন।
কেন ২০২২-এর ডিসেম্বর? কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, ২০১৭-র ডিসেম্বরে রাহুল সভাপতি হয়েছিলেন। কংগ্রেস সভাপতি পদের মেয়াদ ৫ বছর। ২০১৯-এর জুলাইতে রাহুল পদত্যাগ করেন। এর পর সনিয়াকে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী করা হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে যিনিই সভাপতি হোন না কেন, তাঁর মেয়াদ হবে মাত্র দু’বছর। ২০২২-এর ডিসেম্বরে ফের সভাপতি পদে নির্বাচন করতে হবে। অগস্টে কংগ্রেসের ২৩ ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখে কার্যত রাহুলের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ ছিল, রাহুল দায়িত্ব না-নিয়ে পিছন থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। কারও সঙ্গে আলোচনা করছেন না। এক ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা বলেন, ‘‘রাহুল হয়তো মনে করছেন, ২০২২-এ মোদী বিরোধী হাওয়া জোরদার হবে। তিনি সে সময় দায়িত্ব নিয়ে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বাজিমাত করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু এখন দলের নিচু স্তর থেকে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিশ্রম তিনি করতে নারাজ।’’ রাহুল-শিবির অবশ্য একে জল্পনা বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।
কংগ্রেস নেতাদের ধারণা, রাহুল নিজের অবস্থান না-বদলালে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পরে গাঁধী পরিবারের ‘পরম আস্থাভাজন’ কাউকে সভাপতির পদে দেখা যাবে। সে ক্ষেত্রে মল্লিকার্জুন খড়্গে, মীরা কুমার, মুকুল ওয়াসনিক বা কে সি বেণুগোপালের মতো নাম নিয়ে জল্পনা চলছে। মহারাষ্ট্রের এক ‘বিক্ষুব্ধ’ কংগ্রেস নেতার মন্তব্য, ‘‘সীতারাম কেশরীর দৃষ্টান্ত মাথায় রেখে গাঁধী পরিবার সভাপতি পদে এমন কাউকে চাইবে না, যিনি নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করবেন।’’ কিন্তু এতে কি ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা সন্তুষ্ট হবেন? কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, তাঁদের দাবি মেনে সভাপতি পদে নির্বাচনের পর কংগ্রেস সংসদীয় বোর্ড তৈরি হতে পারে। পাঁচমঢ়ী বা শিমলার মতো চিন্তন শিবিরও ডাকা হতে পারে। কংগ্রেস আজ জানিয়েছে, রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন। ৩ মাস ধরে ৩ নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ২ কোটি সই সংগ্রহ করেছে। সেই সই সম্বলিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাহুল পঞ্জাবে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ট্রাক্টর র্যালি করেছিলেন। কিন্তু তার পরে তিনি কেন উধাও হয়ে গেলেন, প্রশ্ন উঠছে।