—ফাইল চিত্র।
অমিত মালবীয়র মতো বিজেপি নেতারা বলছেন, মৃত্যুর খবর বড় করে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত ৮৫ শতাংশ মানুষ যে হাসপাতালে না-গিয়েই সুস্থ হয়ে উঠছেন, তা নিয়ে খবর হচ্ছে না।
করোনা বিপর্যয় নিয়ে আমজনতার মধ্যে নেতিবাচক মনোভাবের ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারের দিকেই যে অভিযোগের আঙুল উঠছে, তা-ও টের পাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। চাপের মুখে এই দুর্যোগের মধ্যেও ইতিবাচক মনোভাব ‘জাগিয়ে তুলতে’ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা সরকারের ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ তুলে ধরার চেষ্টা শুরু করেছেন। সরকারি আমলাদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে আরএসএস-ও ইতিবাচক মনোভাব জাগিয়ে তুলতে ‘পজ়িটিভিটি আনলিমিটেড’ নামে অনলাইন অনুষ্ঠান শুরু করেছে। যার শেষ দিনে খোদ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত বক্তৃতা করবেন।
কোভিড মোকাবিলায় পুরো সময় না-দিয়ে, মোদী সরকারকে এই ইতিবাচক মনোভাব জাগিয়ে তোলার দিকে নজর দিতে দেখে বিরোধীরা আজ কেন্দ্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন, “যাঁরা নিজের কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, সেই সব পরিবার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে ইতিবাচক ভাবনার মিথ্যা আশ্বাস একটা প্রহসন। যাঁরা অক্সিজেন ও হাসপাতালের বেডের সমস্যার মুখোমুখি, তাঁদের কাছেও। বালিতে মুখ লুকিয়ে ফেলাটা ইতিবাচক মনোভাব নয়। দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।”
ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও আজ এ বিষয়ে মুখ খুলে বলেছেন, চার দিকে মৃত্যু ও শোকের পরিবেশের মধ্যে ইতিবাচক ভাবনা ছড়ানোর নামে লাগাতার মিথ্যা বলা ও প্রচার করাটা জঘন্য ব্যাপার। ইতিবাচক হওয়ার জন্য আমাদের সরকারের অন্ধ প্রচারক হওয়ার প্রয়োজন নেই।
কোভিড পরিস্থিতি হাতের নাগালে চলে যাওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন না। রাহুলের মন্তব্য, “যাঁদের জবাবদিহি করার কথা, তাঁরা লুকিয়ে বসে রয়েছেন।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠক তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকার পরে এ দিন তথ্য-সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর সাংবাদিক বৈঠকে হাজির হন ঠিকই, তবে টিকা থেকে অক্সিজেনের অভাব নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি। শুধু বলেছেন, “একশো বছরে এমন সঙ্কট আসে। সরকার সব রকম চেষ্টা করছে।”
প্রধানমন্ত্রীর দফতর আজ জানিয়েছে, মোদী এ দিন অক্সিজেন ও ওষুধের জোগান নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। রাজ্যগুলিকে ওষুধ-অক্সিজেনের জোগান বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোভিডের সঙ্গে মিউকরমাইকোসিস বা চোখে কালো ছত্রাকের বিপদ নিয়েও আলোচনা হয়। পিএমকেয়ার্স তহবিলের অর্থে কেনা ভেন্টিলেটরে অনেক রাজ্যেই ত্রুটি ধরা পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যগুলিকে ভেন্টিলেটর প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে মিলে ওই ত্রুটি সারাতে হবে। রাহুলের অভিযোগ, “এখনও মৌলিক সমস্যাগুলিরই সমাধান হয়নি।”