দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগিরদের ধর্না ছবি: পিটিআই
দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগিরদের লাগাতার ধর্না এবং গত কাল তাঁদের উপরে পুলিশি হামলার অভিযোগের জেরে প্রবল অস্বস্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যদিও ওই আন্দোলনে বিরোধীদের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করে অভিযুক্ত জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের অপসারণে এখনও নারাজ কেন্দ্র। পুলিশি অভিযানের পরে প্রধানমন্ত্রীর ‘বেটি বাঁচাও’ অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধী। সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। তবে বিজেপি নেতৃত্বের মতে, অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত ব্রিজভূষণকে সরানোর প্রশ্ন নেই। বিজেপি নেতাদের একাংশের বক্তব্য, কৃষক আন্দোলনের সময়ে সক্রিয় ‘দেশবিরোধী শক্তি’ এ বার কুস্তিগিরদের সমর্থনে দাঁড়িয়ে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে চায়। বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ায় অভিযুক্ত আশিস মিশ্রের বাবা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে সরানোর দাবি এ ভাবেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। ব্রিজভূষণ উত্তরপ্রদেশের ছ’বারের সাংসদ এবং রাজপুত নেতা। রাম জন্মভূমি আন্দোলনে তিনি লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথের চালক ছিলেন। ফলে লোকসভার আগে হিন্দু ভোটের চিন্তাও রয়েছে এ ক্ষেত্রেও।
বিতর্কে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিরদের গায়ে হাত তোলা ও অভব্য আচরণের অভিযোগ। আজ রাহুল বলেন, ‘‘বেটি বাঁচাও’ (নিয়ে প্রচার) আসলে নাটক! বিজেপি মহিলাদের উপরে অত্যাচারে কখনওই পিছিয়ে থাকে না।’’ মালদহে মমতা বলেন, ‘‘দিল্লিতে মহিলা কুস্তিগিরদের পুলিশ দিয়ে মারা হচ্ছে। কোথায় গেল কেন্দ্রীয় দল? বাংলায় ১৫১ বার কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে কী হয়েছে তা আমরা জানি। সেখানে কোথায় গেল কেন্দ্রীয় দল! বাংলায় চকলেট বোমা ফাটলেও এনআইএ-কে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” ব্রিজভূষণের অপসারণের দাবিতে কলকাতার ভবানীপুরে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস।
পুলিশের আচরণ যে ভুল ছিল, তা ঘরোয়া ভাবে মানছেন বিজেপি নেতারাও। যদিও অনেকেই মনে করাচ্ছেন, আন্দোলনের চাপে কৃষি আইন প্রত্যাহারে মোদী বাধ্য হন। কাজেই শেষ পর্যন্ত ব্রিজভূষণকে সরিয়েই মুখরক্ষা করতে হবে নাতো কেন্দ্রকে?