কংগ্রেস সভাপতি: প্রচারে রাহুল গাঁধী। গুজরাতে। ছবি: পিটিআই।
রাহুল গাঁধীকে দলের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করল কংগ্রেস।
তাঁর মনোনয়নপত্র পেশের দিনে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন ‘ঔরঙ্গজেব-রাজ মুবারক’। আজ তিনি টুইটারে ‘রাহুলজি’-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর ‘ফলপ্রসূ কার্যকাল’ও কামনা করেছেন। পাল্টা টুইটে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাহুল।
আগামী শনিবার বেলা ১১টায় দলের সদর দফতরে রাহুলের হাতে সভাপতি নির্বাচনে জয়ের শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ভাবে সে দিনই সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি। দলীয় সূত্রের খবর, এর পরে সাংগঠনিক স্তরে বড়সড় রদবদল হতে চলছে। স্যাম পিত্রোদা, শশী তারুরের মতো প্রবীণরা নতুন দায়িত্ব পাবেন। সাধারণ সম্পাদক পদে আনা হবে বেশ কিছু নবীন মুখও। তরুণ নেতাদের অন্যতম গৌরব গগৈয়ের কথায়, ‘‘রাহুল গাঁধীকে ঘিরে গোটা তরুণ প্রজন্মের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। মোদী সরকারের মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে বিরক্ত হয়ে মানুষ এখন সত্যি কথা বলার মতো নেতা খুঁজছেন।’’
রাহুল দলের সভাপতি হওয়ার পরে সনিয়া গাঁধীর ভূমিকা কী হবে?
এখনও স্পষ্ট নয় তা। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের অনেকেই চাইছেন, আপাতত ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন থাকুন তিনিই। কিন্তু সনিয়া নিজে বিশেষ আগ্রহী নন তাতে। কিন্তু প্রবীণ নেতাদের যুক্তি, সনিয়া থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, লালুপ্রসাদ থেকে বাম নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করতে অনেক স্বস্তি বোধ করবেন। কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন বলেন, ‘‘সনিয়াজির কী ভূমিকা হবে, তা সময়ই বলবে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, ১৯ বছর সভানেত্রী হিসেবে সনিয়া দেখিয়েছেন, সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার অসীম ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। সনিয়া যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন মাত্র ৪টি রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। সেখান থেকে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস।’’ সন্দেহ নেই সনিয়ার সেই সাফল্যই চ্যালেঞ্জ এখন রাহুলের সামনে। মায়ের মতো সকলকে নিয়ে চলা ও দলকে কেন্দ্রে ফেরানোর পরীক্ষা তাঁর সামনে।
আরও পড়ুন: ক্ষমা চেয়ে নিন মোদী, ক্ষিপ্ত মনমোহন
যদিও যাঁদের কথা তুলে দলের প্রবীণেরা এখনও সনিয়াকে ইউপিএ-র মাথায় চাইছেন, তাঁদের অন্যতম লালুপ্রসাদ কিন্তু রাহুলকেই স্বাগত জানিয়েছেন। রাচীতে বলেছেন, ‘‘সারা দেশ এই যুব নেতাকে চাইছে। রাহুলের মধ্যেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। তিনি এখন অনেক পরিণত।’’
সভাপতি নির্বাচনে রাহুল ছাড়া কোনও প্রার্থী ছিলেন না। বিকেল তিনটেয় মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় শেষ হতেই এই নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নেতা মুল্লাপল্লী রামচন্দ্রন বলেন, ‘‘৮১টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সবগুলিই বৈধ। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পেরিয়েছে। এক জনই প্রার্থী। কংগ্রেসের গঠনতন্ত্র মেনে তাই রাহুল গাঁধীকে সভাপতি নির্বাচিত ঘোষণা করছি।’’ রাহুলের নির্বাচন ঘিরে এ দিন উৎসব শুরু হয় ২৪ আকবর রোডে। বাজি-পটকা, জয়ধ্বনির সঙ্গে চলে সন্দেশ-রসগোল্লা আর লাড্ডু বিতরণ।