বিক্ষোভ: সিবিআই দফতরের সামনে যুদ্ধবিমানের ছবি নিয়ে প্রতিবাদে রাহুল গাঁধী। শুক্রবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
তিনি বললেন, ‘চৌকিদার…।’
বিপুল গর্জনে জনতা পাদপূরণ করল, ‘চোর হ্যায়।’
দয়াল সিংহ কলেজ থেকে সিবিআইয়ের সদর দফতর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পথ। রাস্তায় তো বটেই, দু’পাশের বাড়িগুলোর জানলায়, ছাদে গিজগিজে ভিড়। এ সব যে সে বাড়ি নয়। কোনওটায় এনআইএ, কোনওটায় আইটিবিপি-র দফতর।
এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাকে আজ সকালে ঘণ্টা চারেক স্তব্ধ করে রাখলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর প্রতিবাদ এবং সেই সঙ্গে রাফাল-আন্দোলনকে নিয়ে এলেন রাজপথে। তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক স্লোগান তুললেন, ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, চৌকিদার চোর হ্যায়।’ বফর্স-কাণ্ডে রাজীব গাঁধীর বিরুদ্ধে এমন স্লোগানই তুলেছিল বিজেপি-সহ বিরোধীরা। প্রায় তিন দশক পরে তা ফিরিয়ে দিলেন রাহুল।
রাহুল আসবেন জেনে সিবিআই দফতরের সামনে ব্যারিকেড করা হয়েছিল। তার সামনে বসে পড়লেন রাহুল। সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক, সিপিআইয়ের ডি রাজা। আর তাঁদের পাশে খাঁচার মধ্যে তোতা সেজে এক ব্যক্তি। হাতে ‘সিবিআই’ লেখা প্ল্যাকার্ড। ইউপিএ জমানায় সিবিআই-কে তীব্র ভর্ৎসনা করে ‘খাঁচার তোতা’ বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
রাহুল বলেন, ‘‘চৌকিদার চোর। অনিল অম্বানীকে সাহায্য করে এখন ভয়ে সিবিআই প্রধানকে হটিয়েছেন। বিরোধীরা মিলে চৌকিদারকে চুরি করতে দেবে না।’’ তত ক্ষণে অলোক বর্মার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় চলে এসেছে। রায়ে উজ্জীবিত রাহুলের ইঙ্গিতে ব্যারিকেড ভেঙে গ্রেফতার হলেন কংগ্রেস
কর্মীরা। রাহুল নিজেও। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল লোধী গার্ডেন থানায়। কিছু পরে অবশ্য ছেড়েও দেওয়া হয়।
রাহুল বলেন, ‘‘আমাকে যত বার খুশি গ্রেফতার করুক, কোনও ফারাক হবে না। অবশেষে সবাই জানবেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি দুর্নীতি করে পালাতে পারেন, লুকোতে পারবেন না। নীরব মোদী, ললিত মোদী, মেহুল চোক্সী পালিয়েছেন, বোধহয় অনিল অম্বানীও পালাবেন।’’ পরে থানায় নিজের ছবি দিয়ে টুইট করলেন, ‘‘সরকার লাখ চেষ্টা করুক, সত্যকে কয়েদ করতে পারবে না। পুরো দেশ পথে নেমে প্রধানমন্ত্রীকে সত্যের আয়না দেখাচ্ছে।’’ বিজেপি বলছে, রাহুল ভিত্তিহীন প্রচার করছেন। আর কংগ্রেস বলছে, ভোটের আগে কর্মীদের চাঙ্গা করে ফেললেন সভাপতি। রাফাল এখন নতুন বফর্স।