রাহুল গাঁধী, সিপি জোশী এবং নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।
গত বছর গুজরাত বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অশোভন’ মন্তব্য করে সাসপেন্ড হতে হয়েছিল মণিশঙ্কর আয়ারকে। এ বার রাজস্থানে, ঠিক ভোটের আগেই, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘জাতিবৈষম্যমূলক’ মন্তব্যের জন্য, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সিপি জোশীকে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ালেন রাহুল গাঁধী। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় কংগ্রেস। নেতাদের আরও সাবধান হতে হবে। মন্তব্য করতে হবে বুঝে শুনে।
সম্প্রতি রাজস্থানে একটি জনসভায় বক্তৃতা রাখছিলেন সিপি জোশী। সেখানে নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপি নেতাদের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির অনেক নেতাই হিন্দু ধর্ম নিয়ে বড়াই করেন। কিন্তু ওঁদের জাত কেউ জানেন কি? হিন্দুধর্ম নিয়ে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণরাই মন্তব্য করতে পারেন। কারণ এ ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে ওঁদের। নরেন্দ্র মোদী, উমা ভারতীরা ব্রাহ্মণ নন। হিন্দুত্ব নিয়ে বড়াই করতে পারেন না ওঁরা।’’
তাঁর মন্তব্য নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ভিডিয়োটি শেয়ার করেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক হর্ষ সাঙভি। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতার মন্তব্য যথেষ্ট লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উনি নিচু জাতের লোক বলেছেন। কিন্তু তাতে কী? হিন্দুত্ব নিয়ে উনি কংগ্রেসের চেয়ে অনেক বেশি জানেন। আর ব্রাহ্মণরাই হিন্দুধর্মের একমাত্র রক্ষক কে বলেছে?’’
আরও পড়ুন: টিকিট না পেয়ে দল ছাড়ার হিড়িক! রাজস্থানে চার মন্ত্রী-সহ ১১ জনকে বহিষ্কার করল বিজেপি
আগামী ৭ ডিসেম্বর রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে বসুন্ধরা রাজেকে হটিয়ে সরকার গড়তে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস। তার আগে সিপি জোশীর এমন মন্তব্যে অস্বস্তি বাড়ে তাদের। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসতে হয় দলের সর্বভারতীয় সভাপতিকেই। শুক্রবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সিপি জোশীর মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন রাহুল। লেখেন, ‘‘কংগ্রেস বিভাজনের আদর্শে বিশ্বাসী নয়, সিপি জোশীর মন্তব্য তাই দলের নীতির পরিপন্থী। দলের নেতাদের কাছে আমার অনুরোধ, এমন কোনও মন্তব্য করবেন না যাতে কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ দুঃখ পান। কংগ্রেসের আদর্শ এবং চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল জোশীজি। আশাকরি নিজের ভুল বুঝতে পারবেন উনি এবং ক্ষমা চেয়ে নেবেন।’’
আরও পড়ুন: ‘শোভনদার জীবন গুছিয়ে দিয়েছি আমি’, বললেন বৈশাখী
‘নির্দেশ’ পেয়েই তড়িঘড়ি ক্ষমা চেয়ে নেন জোশী। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘কংগ্রেসের আদর্শকে সম্মান করি। আমার মন্তব্যে যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ যদিও গতকাল রাতে উল্টো সুর ধরা পড়েছিল তাঁর গলায়। মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি। জনসভায় আসলে কী বলেছিলেন, তার একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেন। তবে দলনেতার নির্দেশ পেয়ে আর কাউকে দোষারোপ করতে যাননি তিনি।
এর আগে, গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘নীচ ধরনের মানুষ (নীচ কিসম কা আদমি)’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মণিশঙ্কর আইয়ার। তার জন্য তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে কংগ্রেস। এ বছর অগস্টে অবশ্য সেই সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়।