কাশ্মীরে রাজনৈতিক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত রাহুলের

হাতে আইনি অস্ত্র থাকলেও, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যাচ্ছে না কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৭
Share:

জম্মু-কাশ্মীরের লড়াই লড়তে চান রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

আদালতে নয়। রাজনীতির মাঠেই জম্মু-কাশ্মীরের লড়াই লড়তে চান রাহুল গাঁধী।

Advertisement

হাতে আইনি অস্ত্র থাকলেও, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যাচ্ছে না কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আপাতত তেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার বদলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের অফিসকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলেই প্রচারে নামতে চান তিনি।

কেন? কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, রাজ্যপাল বিধানসভা ভেঙে দেওয়ায় রাজনৈতিক ভাবে কংগ্রেস, মেহবুবা মুফতির পিডিপি, ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স, সকলেরই ভাল হয়েছে। তিন দল একসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের সরকার গড়তে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু সরকার গঠিত হলে পিডিপি এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স জোটে সংঘাত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ছিল। তার বদলে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যের বাকি সব দল এককাট্টা বলে বার্তা দেওয়া গিয়েছে। কংগ্রেসের সেটাই বড় পাওনা।

Advertisement

কংগ্রেসের ওই নেতাদের মতে, কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে পিডিপি জোট করতে যাওয়ায় দলে ভাঙনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। মেহবুবাকে এখন আর তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আবার ওমরকেও তাঁর সঙ্গে কাজ করতে হল না। তবে তিনিও জম্মু-কাশ্মীরের স্বার্থে জোটে যেতে রাজি হয়েছিলেন বলে প্রচার করতে পারবেন। অর্থাৎ আদালতের রায়ে বিধানসভা ভাঙার সিদ্ধান্ত খারিজ হয়ে জোট সরকার গঠন করা গেলে সমস্যা কম হত না। শেষ পর্যন্ত সরকার টিকিয়ে রাখতে না পারলে বদনাম হত

কংগ্রেসের। বরং এখন রাজনৈতিক প্রচারের ক্ষেত্রে বিরোধীরা সুবিধাজনক অবস্থায় রইলেন।

রাহুলের সঙ্গে আলোচনায় কংগ্রেসের আইনজীবী নেতারা যুক্তি দিয়েছিলেন, কর্নাটকে রাজ্যপাল বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে সরকার গঠনের জন্য ডেকেছিলেন। সেই সিদ্ধান্ত আদালত খারিজ করে দেওয়ায় জেডি (এস)-কংগ্রেস সরকার গঠিত হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও আদালত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রায় দিতে পারত। তাঁরা উল্লেখ করেন, মনমোহন-আমলের গোড়ায়, ২০০৫-এ বিহারে এনডিএ জোট এবং কংগ্রেস-আরজেডি জোট সমান সংখ্যক আসন পেয়েছিল। এনডিএ জোট নির্দলদের নিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানায়। কিন্তু তাদের সুযোগ না দিয়ে রাজ্যপাল বুটা সিংহ বিধানসভা ভেঙে দেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছিল। তবে ততদিনে ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনে বাধা দেয়নি।

জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমি চাই ওঁরা আদালতে যান।’’ কংগ্রেসের আইনজীবী নেতাদের দাবি, রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের পিছনেও সাংবিধানিক যুক্তি নেই। এস আর বোম্মাই

মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছিল, রাজ্যপাল যে কোনও কারণে বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন না। সরকার গড়া সম্ভব হচ্ছে না বলে নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে। ফলে বিধায়ক কেনাবেচা হবে, অশুভ আঁতাঁত— রাজ্যপালের এ সব যুক্তি ধোপে টিকত না। কংগ্রেস সভাপতি সেই যুক্তি মেনে নিলেও, রাজনৈতিক ভাবে আদালতে না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement