তোলপাড় দেশ, বিদেশে পাড়ি দিলেন রাহুল

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ছাত্ররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৮
Share:

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়নের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার সোলে। ছবি: পিটিআই।

শনিবার রামলীলা ময়দানে পুরনো ঝাঁঝ দেখিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। রবিবার রাতেই পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে।

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ছাত্ররা। ইন্ডিয়া গেটে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। রাষ্ট্রপতির কাছে বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে যাচ্ছেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করেন, এমন এক উত্তপ্ত সময়ে বিরোধী শিবিরকে ফের চাঙ্গা করার সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। আর রাহুলকে সভাপতি পদে ফেরানোর তোড়জোড় যখন চলছে, তখন তিনি চলে গেলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়।

রাহুলের দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, ‘অফিসিয়াল সফর’। ফিরবেন সপ্তাহান্তেই। কিন্তু কোন ‘অফিসিয়াল’? সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে? রাহুল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য। কিন্তু লোকসভায় সচিবালয় সূত্র বলছে, এই কমিটির কোনও বিদেশ সফর নেই। তা হলে? সন্ধেয় এক টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে একগাল হেসে কটাক্ষ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ‘‘রাহুল গাঁধী আজ কোথায়? আমাকে তো এক সাংবাদিক বললেন, তিনি কোরিয়াতে। বিরোধীরা আজ সকলে রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছেন, আর ওই সজ্জন কোরিয়াতে!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কাউকে রেলের সম্পত্তি নষ্ট করতে দেখলেই গুলি করুন: রেল প্রতিমন্ত্রী

কিছু ক্ষণ পরেই টুইট এল রাহুলের। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়নের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করেছেন। পাশে রয়েছেন কংগ্রেসের অনাবাসী মোর্চার প্রধান স্যাম পিত্রোদা। রাহুল সেখানেও লিখেছেন, ‘অফিসিয়াল’ প্রতিনিধি দলের কথা। তার অঙ্গ হয়েই তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেছেন। দুই দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়-সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাহুল অবশ্য স্পষ্ট করেননি, কোন প্রতিনিধি দলের হয়ে সফরে গিয়েছেন তিনি।

কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে, এক সপ্তাহের জন্য বিদেশে কাটিয়ে বড়দিনের সময় আবারও ছুটিতে যেতে পারেন রাহুল। তবে ২৮ ডিসেম্বর কংগ্রেসের ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ রয়েছে। যে দিন ‘দেশ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও’ অভিযান শুরু হবে। তার আগে ফিরে আসতে পারেন রাহুল। যদিও বছরের শেষ ক’দিন মায়ের সঙ্গেই কোথাও ছুটি কাটাতে যান তিনি। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ছেলেকে সভাপতি পদে ফেরাতে আগ্রহী সনিয়া গাঁধী, কিন্তু রাহুল কী তার জন্য প্রস্তুত? আগামিকাল ঝাড়খণ্ডে ভোটের প্রচারে যাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা। রাহুলের কী এ সব নিয়ে কোনও চিন্তা নেই?’’ ‘রাহুল ফেরাও’ অভিযানের অন্যতম পুরোধা ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল অবশ্য আজও বলেছেন, ‘‘রাহুল গাঁধীকে অবিলম্বে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া উচিত। তিনি ‘রাহুল সাভারকর’ নন বলে ঝড় তুলেছেন রামলীলায়।’’

অমিত আজ পাল্টা বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী চাইলেও সাভারকর হতে পারবেন না। তার জন্য তপস্যা, ত্যাগ ও প্রবল দেশভক্তি দরকার। এই তিনের মধ্যে একটিও রাহুলের ব্যক্তিত্বে নেই। দেশের জন্য ১২ বছর সেলুলার জেলে কাটিয়েছেন সাভারকর। রাহুল ১২ দিন, ১২ ঘণ্টাও থাকতে পারবেন না। রাহুলকে তাঁর শিক্ষকেরা জানাননি যে ইন্দিরা গাঁধী ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ১১ হাজার টাকা সাভারকর ট্রাস্টকে দিয়েছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement