গুরদাসপুরে নরেন্দ্র মোদী ও সংসদে রাহুল গাঁধী। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
রাফাল পরীক্ষায় আজও বসলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত কাল রাহুল গাঁধী যখন রাফাল নিয়ে তাঁকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছিলেন, সংসদ ভবনে থাকলেও লোকসভা-মুখো হননি প্রধানমন্ত্রী। ছিলেন না লালকৃষ্ণ আডবাণী, রাজনাথ সিংহ, সুষমা স্বরাজ, নিতিন গডকড়ীর মতো প্রথম সারির নেতারাও। রাজ্যসভার নেতা হয়েও মোদীকে বাঁচানোর ভার নিতে হয়েছিল একা অরুণ জেটলিকে। কাল রাতেই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে চারটি প্রশ্ন ছুড়ে রেখেছিলেন রাহুল। কিন্তু আজও সংসদে না এসে পঞ্জাবে উড়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
আর এডিএমকে, টিডিপির সাংসদদের সাসপেন্ড করা সত্ত্বেও গোলমাল না থামায় রাফাল আলোচনা শেষ না করেই লোকসভা গোটা দিনের মতো মুলতুবি করে দেন স্পিকার। রাজ্যসভাতে প্রশ্নোত্তর পর্বে সুষমা স্বরাজকে রাফাল প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের দোহাই দিয়ে বিতর্ক এড়ানোর চেষ্টা করেন সুষমা। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওয়াক আউট করে কংগ্রেস।
কিন্তু ছাড়লেন না রাহুল। সকাল থেকেই মোদীকে বিঁধছিলেন। দিন গড়াতে তাঁর আক্রমণের মুখে পড়লেন মোদীর একমাত্র ‘পরিত্রাতা’ জেটলিও।
আরও পড়ুন: নড়বড়ে, তাই কি পুরী নিয়ে জল্পনায় নীরব!
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে চারটি প্রশ্ন ছিল রাহুলের। এক, ১২৬টির বদলে ৩৬টি বিমান কেন? দুই, বিমানের দাম ৫৬০ কোটি টাকার বদলে ১৬০০ কোটি টাকা কেন? তিন, মনোহর পর্রীকর কেন নিজের বেডরুমে রাফাল ফাইল রেখেছেন? চার, হ্যালের বদলে অনিল অম্বানীকে রাফাল বরাত দেওয়া হল কেন? মোদী আজ পঞ্জাবে যেতেই রাহুল ফের টুইট করেন, ‘‘মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ও রাফাল পরীক্ষা থেকে পালিয়েছেন। উল্টে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জ্ঞান দেবেন।’’ রাহুলের তোলা চারটি প্রশ্নের জবাব দেননি মোদী। তবে রাফাল নিয়ে কংগ্রেসকে ফের মিথ্যাবাদী বলেছেন। গুরদাসপুরের জনসভায় তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রতিরক্ষা বাহিনীকে দুর্বল করতেই লাগাতার মিথ্যা বলে যাচ্ছে কংগ্রেস।’’
আরও পড়ুন: আজ শুনানি মন্দির নিয়ে, সরব সঙ্ঘ
এর পর রাতে আর একটি টুইটে গত ১৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম শিল্পে নতুন লগ্নির পরিমাণ কমেছে: এমন একটি খবরের উল্লেখ করে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘মোদীজি এটি তো খুবই খারাপ। দয়া করে আপনার মুখপাত্র ‘জেটলি’কে ‘স্পিন’ দিতে বলবেন?’’
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও বললেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ছোটদের জন্য ‘পরীক্ষা যোদ্ধা’ বই লেখেন। পরীক্ষায় ছাত্ররা যাতে ভয় না পান, তার মন্ত্র দেন। কিন্তু নিজেই প্রশ্ন আগাম জেনেও পরীক্ষা দিতে ভয় পেলেন! আর অরুণ জেটলি তাঁকে সামলাচ্ছেন। বিনিয়োগ কমছে, ব্যাঙ্কে প্রতারণা বাড়ছে, এনপিএ বাড়ছে, অর্থমন্ত্রীর ভ্রূক্ষেপ নেই।’’
রাজ্যসভায় সুষমাকে কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ও ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের বৈঠকের কার্য বিবরণী প্রকাশ করে বিতর্ক শেষ করুন।’’ সুষমার জবাব, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনও বিতর্কই নেই। বিতর্ক শুধু বিরোধীদের মনে।’’ এর পর কংগ্রেস ওয়াক আউট করলেও এনডিএ শরিক শিবসেনার সঞ্জয় রাউত প্রশ্ন তোলেন, ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রীর সফরে কি রাফাল নিয়ে কথা হয়েছে? সুষমা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিনই তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন, ফলে কথা হয়নি।’’