গোমাংস খাওয়ার গুজব রটায় উত্তরপ্রদেশের বিসারায় প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় মূল দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। একই দিনে বিসারায় নিহতের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।
সোমবার রাতে দাদরি পরগনার বিসারায় মহম্মদ আখলাক নামে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম হন আখলাকের ছোট ছেলে দানিশও। প্রাথমিক ভাবে দশ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ছ’জনকে। নিউজ চ্যানেলের ফুটেজ দেখে বাকিদের খোঁজ চলতে থাকে। এরই মধ্যে খবর আসে গ্রেটার নয়ডার একটি খামার বাড়িতে লুকিয়ে আছে বিশাল রানা এবং শিবম রানা নামে মূল দুই অভিযুক্ত। শনিবার দুপুরে সেখানে হানা দেয় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর আঠারোর বিশাল স্থানীয় বিজেপি কর্মী সঞ্জয় রানার ছেলে। আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে বিশালই গ্রামবাসীকে খেপিয়ে তুলেছিল বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, মন্দিরের পুরোহিতকে টাকা দিয়ে আখলাকের বাড়িতে গোমাংস রাখার কথা ঘোষণা করতে বাধ্য করেছিল সে-ই। ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বাভাবিক ভাবেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সঞ্জয়। তিনি নিজে জানিয়েছেন, ২০ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে আছেন তিনি। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব যদিও দাবি করেছে দলের কোনও পদে নেই তিনি।
আখলাকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে শনিবার সকালে বিসারায় আসেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং আম আদমি পার্টির (আপ) অন্যতম শীর্ষ দুই নেতা সঞ্জয় সিংহ এবং আশুতোষ। বেলা গড়াতে সেখানে আসেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী ও দলের আরও কিছু স্থানীয় নেতা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তাঁদের বিসারায় ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। সাংবাদিকদের দেখে পাথর ছুড়তে থাকেন। ভাঙচুড় করা হয় গাড়িও। বেলা গড়ালে অবশ্য ঢুকতে দেওয়া হয় কেজরীবাল, রাহুলদের। আখলাকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর কেজরীবাল বলেন, ‘‘যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখের। রাজনৈতিক নেতারা ছাড়া আর কেউই লাভবান হলেন না এই ঘটনা থেকে।’’ টুইটারে রাহুল গাঁধী লেখেন, ‘‘চূড়ান্ত সময়। মৌনতা ভাঙুন প্রধানমন্ত্রী!’’