অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।
অর্থনীতির অবস্থা ভাল বলতে গিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদী সরকারই বিরোধীদের হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিল।
চলতি আর্থিক বছরের শুরুতেই বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত দাবি করে আজ আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের পূর্বাভাসকে হাতিয়ার করেছে অর্থ মন্ত্রক। যে পূর্বাভাস বলছে, ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের পর থেকে দেশের বৃদ্ধির হার বাড়তে শুরু করবে। যা দেখিয়ে আজ কংগ্রেস প্রচার শুরু করেছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মোদী সরকার গদিচ্যুত হওয়ার পরেই আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়তে শুরু করবে।
মোদী সরকারকে ‘স্যুট বুট কি সরকার’ বলে গরিব বিরোধী হিসেবেই কাঠগড়ায় তুলেছেন রাহুল গাঁধী। অভিযোগ তুলেছেন, মোদী সরকার বড়লোকদের ঋণ মকুব করে, চাষিদের ঋণ মকুব করে না। আজ পরিকাঠামো ও ব্যাঙ্কের পুঁজিতে বাড়তি অর্থ ঢালার কথা ঘোষণার পরে কংগ্রেস সেই অস্ত্রেই সরকারকে নিশানা করেছে।
আজ ব্যাঙ্কের পুঁজিতে ২ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকা ঢালার ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালার অভিযোগ, ‘‘গত তিন বছরে মোদী সরকার বড়লোকদের ১ লক্ষ ৮৮ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ী ঋণ মাফ করে দিয়েছে। এখন করদাতাদের অর্থে আরও ঋণ মকুব হবে?’’ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ শোধ করতে না বলে মোদী সরকার ব্যাঙ্কের পুঁজিতে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা ঢালছে। কর্পোরেট লুঠের জন্য করদাতারা টাকা দেবে।’’ আজ জেটলি ঘোষণা করেছেন, সড়ক তৈরির জন্য ‘ভারতমালা’ প্রকল্পের ৫.৩৫ লক্ষ টাকাও বেশিরভাগটাই আসবে বাজার থেকে ধার করে। যা দেখে কংগ্রেসের অভিযোগ, এই ঋণের বোঝাও জনতাকে বইতে হবে।
কংগ্রেসের দাবি, নোট বাতিল ও জিএসটি-র ভুল রূপায়ণ অর্থনীতির ভিতে আঘাত করেছে। নোটবন্দি ও তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু, উভয় সিদ্ধান্তের জন্য আজ পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন। কলকাতায় বণিকসভার অনুষ্ঠানে অমিতবাবু বলেন, ‘‘নোটবন্দির জন্য ১৫ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ১০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জিডিপি কমেছে ২%। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা। যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়া জিএসটি চালু করায় সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি।’’ সরকারি সংস্থাকে অবশ্য আজ ছোট-মাঝারি সংস্থার পাওনা ৯০ দিনের মধ্যে মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।