অরুণ শৌরি এবং যশবন্ত সিন্হা।
সুর বেঁধে দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। এ বার রাফাল নিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্যরাও। দাবি করলেন, বফর্সের থেকেও বড় দুর্নীতি রাফাল।
যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরির মতো প্রাক্তন মন্ত্রীরা আজ দিল্লিতে রাফাল নিয়ে পুরোদস্তুর সাংবাদিক সম্মেলন করে ফেললেন। সঙ্গে প্রশান্ত ভূষণের মতো দুঁদে আইনজীবী। বফর্স নিয়ে এক সময় এই অরুণ শৌরিই সরব হয়েছিলেন। আজ তিনিই বললেন, ‘‘বফর্স তো কিছুই নয়। রাফাল বফর্সের থেকেও বড় দুর্নীতি।’’ যশবন্ত দাবি তুললেন তিন মাসের মধ্যে সিএজির ‘ফরেন্সিক অডিট’ করানোর। আর প্রশান্ত ভূষণ বললেন, পদের অপব্যবহার করে বেসরকারি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সরাসরি মোদীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক আচরণের মামলা করা যায়। তবু মামলায় ভরসা নেই ভূষণের। তাঁর দাবি, ‘‘সহারা-বিড়লা ডায়েরি থেকে লোয়া মামলায় স্পষ্ট, এখন আদালতে মামলা করলে সেটা তাদের (সরকার) হাতেই চলে যায়।’’ যশবন্তও মনে করেন, এখন কোনও অভিযোগ বা সংসদে যৌথ তদন্ত কমিটি গড়েও লাভ নেই। সিএজি রিপোর্টই একমাত্র ভরসা।
কিন্তু বিজেপির প্রশ্ন, যে ভাবে রাহুলের সুরে গলা মেলাচ্ছেন শৌরি-সিন্হারা, নেপথ্যে কংগ্রেস নেই তো? যশবন্তের বক্তব্য, তাঁদের সঙ্গে কোনও দলের সম্পর্ক নেই। শুধু তাঁদের অভিযোগ, রাফালের দাম না বলে দুর্নীতি লুকোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করছেন। ১২৬-এর বদলে মাত্র ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে। তা-ও প্রতিটি হাজার কোটি টাকার বেশি দামে। দু’বছরে বিমান আসবে বলে এখন বলা হচ্ছে, চার বছরের বেশি সময় লাগবে।
প্রাক্তন মন্ত্রীরা আরও অনেক কিছুই বলছেন। ইউপিএ জমানার চুক্তি বদলানোর আগে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও বলেছেন, তিনি কিছু জানতেন না।
শৌরি-যশবন্তের দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বাদ দিয়ে দেনায় ডুবে থাকা অনিল অম্বানীর সংস্থার হাতে মোদী তুলে দিয়েছেন বরাত। সেখানেও নিয়মভঙ্গ হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্বাক্ষর ছাড়া এ ভাবে বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া যায়না।
জবাবে বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর বলছেন, ‘‘ক’দিন আগে কংগ্রেস স্বীকার করেছে যে বফর্সে দুর্নীতি হয়েছিল। রাফালে কোনও ঘুষ নেই, দালাল নেই। দুই সরকারের সমঝোতা। তা নিয়েই মিথ্যা প্রচার চলছে। রাহুলের বিরুদ্ধে অধিকারভঙ্গের প্রস্তাবও এসেছে।’’
কিন্তু ভূষণের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে অনিল অম্বানী কে? দুর্নীতি দমন আইন সম্প্রতি বদল করা হয়েছে মোদীকে আড়াল করার জন্যই।’’ শৌরি বলেন, রাফালের দাম প্রকাশ্যে এনেছে বেসরকারি সংস্থা। শুধু সরকারই বলছে না। কারণ বললেই মিথ্যার মুখোশ খুলে যাবে প্রধানমন্ত্রীর। সব শুনে কংগ্রেসের রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘এত দিন আমরা বলছিলাম। মোদী কিছু বলেননি। এ বার বাজপেয়ীর মন্ত্রীরা বলছেন! মোদী এ বার মুখ খুলুন।’’
ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।