পূর্ণেশ মোদী (বাঁদিকে) এবং রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িক ভাবে সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। গুজরাতের সেই বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীকে এ বার নতুন সাংগঠনিক দায়িত্ব দিল বিজেপি। তাঁকে গুজরাত-ঘেরা দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, দমন এবং দদরা ও নগর হভেলির পর্যবেক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দু’বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। তার জেরে খারিজ হয়েছিল ওয়ানেড়ের সাংসদ পদও। গুজরাতের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সুরাত পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশের দায়ের করা ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলার জেরেই ওই রায় দিয়েছিলেন বিচারক।
গুজরাত হাই কোর্ট সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায় বহাল রাখলেও গত ৪ অগস্ট রাহুলের সাজার উপর স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, বিচারপতি আরএস গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ মোদী পদবি অবমাননা মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে দু’বছরের জেলের মেয়াদ নিয়ে সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের আইনি বৈধতা সম্পর্কেই প্রশ্ন তোলে। যদিও তাতে আটকাল না পূর্ণেশের রাজনৈতিক উত্থান।
মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত ছিলেন। মোদীর সঙ্গে তাঁর কিছু ক্ষেত্রে মিলও রয়েছে। মোদীর মতোই দারিদ্রকে সঙ্গী করে বেড়ে ওঠা পূর্ণেশের। মোদীর মতোই জীবনের গোড়ার দিকে চা বিক্রি করতেন তিনি। এমনকি, রোজগারের জন্য একটা সময় দিনমজুরের কাজও করেছেন পূর্ণেশ। আইন নিয়ে পড়াশোনার প্রতি তাঁর বরাবরই ঝোঁক ছিল। সেই সূত্রেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। পরে একটি ল’ফার্মে শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
১৯৮৪ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পূর্ণেশ। এক পর ধাপে ধাপে উত্তরণ। বুথ আহ্বায়ক, থেকে ওয়ার্ড প্রধান। এর পর সুরাত পুরসভার কর্পোরেটর (কাউন্সিলর)। ২০১০ সালে সুরাত বিজেপির সভাপতি এবং তার তিন বছর পরে উপনির্বাচনে জিতে প্রথম বারের বিধায়ক। তবে এ বার তাঁর দায়িত্ব বেশ কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে। দদরা ও নগর হভেলী লোকসভা কেন্দ্রটি ২০১৯ সালে হাতছাড়া হয়েছিল বিজেপির। সাংসদ মোহনভাই দেলকরের রহস্যমৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী শিবসেনা প্রার্থী হয়ে বিজেপিকে হারান। দমন লোকসভাতেও এ বার বিজেপির লড়াই ‘কঠিন’ বলে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রের খবর।