পুরীর জগন্নাথ মন্দির। ফাইল চিত্র।
গভীর রাতে দর্শন সেরে জগন্নাথ মন্দিরের ভিতরে ঘুরছিলেন বছর তিরিশের যুবক। এক সময়ে জগন্নাথদেবের রসুইঘরে তিনি ঢুকে পড়েন। তাঁর নাকি তখন মনে হয়, স্বয়ং ঈশ্বরের জায়গা এত অপরিষ্কার, কেন ভাতটাত ছড়িয়ে আছে। এবং এই সব ভেবেই রসুইঘর পরিষ্কার করতে গিয়েই তিনি বেশ কয়েকটি মাটির উনুন ভেঙে ফেলেন বলে ওই যুবক পুলিশের সামনেই বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মন্দিরের ভিতরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে তাঁকে চিহ্নিত করে মঙ্গলবার পুরীর পার্শ্ববর্তী খুরদা জেলা থেকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পরে এ দিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত যুবকের নাম জগন মহাপাত্র। ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া এবং সম্পত্তি (মন্দিরের উনুন) ধ্বংস করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে রাখা হয়েছে বলে পুরীর পুলিশ সুপার কানওয়ার বিশাল সিংহ জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, জগন ইলেকট্রিক সারাইয়ের কাজ করেন। জগন্নাথ দর্শনের উদ্দেশেই ওই সন্ধ্যায় মোটরবাইকে তিনি পুরী গিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। জগনের পরিবারের লোক এ দিন পুলিশকে বার বার বলেছেন,ওই যুবক মানসিক ভাবে পুরোটা সুস্থ নন। কোথাও কিছু অপরিচ্ছন্ন মনে হলেই তিনি তা পরিষ্কার করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। বিষয়টা বাতিকের পর্যায়ে গিয়েছে। তবে রাতে পুরীর পুলিশ সুপার আনন্দবাজারকে ফোনে বলেন, “ওই যুবক যা বলছেন, তা অসংলগ্ন। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা মন্তব্য করতে পারি না।” শুক্রবার রাতে মন্দির থেকে বেরিয়ে ওই যুবক নিজের মোটরবাইক ছেড়ে চলে যান। হাঁটতে হাঁটতে পুরী স্টেশনে পৌঁছে তিনি কোনও ট্রেন ধরেন। যুবকের এই সব আচরণই পুলিশের কাছে রহস্যজনক ঠেকছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মন্দিরের সব সেবায়েত, কর্তব্যরত পুলিশ, রেলকর্মী ইত্যাদিদের দেখিয়ে, স্থানীয় কিছু সূত্র কাজে লাগিয়ে পুরী পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে চিহ্নিত করেছে। ওই যুবকের বিষয়ে ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া হলেও তিনি যা বলছেন, তাতে পুরোপুরি বিশ্বাস নেই পুলিশকর্তাদের। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীকে দিয়ে অভিযুক্তের শনাক্তকরণ করানো হবে।