সিধু এবং চন্নী। ফাইল চিত্র।
নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর চাপে কংগ্রেস পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অমরেন্দ্র সিংহকে সরিয়ে দিয়েছিল। এ বার সিধুর খবরদারিতে ক্ষুব্ধ নতুন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী গদি ছেড়ে তাঁকেই গদিতে বসার চ্যালেঞ্জ জানালেন। সিধুর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে চন্নী বলেছেন, ‘‘সিধু নিজেই মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ভোটের আগে আগামী দু’মাস কাজ করে দেখান।’’
এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তিতিবিরক্ত এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা হরীশ রাওয়ত আজ পঞ্জাবের দায়িত্ব থেকে রেহাই চেয়েছেন। এত দিন তিনি সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে ঘরোয়া আলোচনায় কাকুতি-মিনতি করছিলেন। আজ প্রকাশ্যেই তিনি কংগ্রেস হাই কমান্ডকে বার্তা দিয়েছেন, তিনি নিজের রাজ্য উত্তরাখণ্ডের ভোটে মনোনিবেশ করতে চান।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রবিবার রাতে চণ্ডীগড়ে কংগ্রেসের বৈঠকে সিধু চন্নীকে তাঁর কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন করেন। তার আগেই সিধু সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে ১৩ দফা কর্মসূচির তালিকা দিয়ে দাবি করেছিলেন, ২০২২-এর গোড়ায় বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে জিততে হলে এই সব কর্মসূচি রূপায়ণ করতে হবে। চণ্ডীগড়ের বৈঠকে সিধু জানতে চান, কেন মাদক পাচারের পিছনে থাকা প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হচ্ছে না? কেন অকালি দলের নেতা বাদল পরিবারের পরিবহণ ব্যবসা, কেব্ল টিভির ব্যবসায়ে লাগাম পরানো হচ্ছে না? মাত্র এক মাস আগে গদিতে বসা চন্নী সিধুকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। সিধু নিজে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে দু’মাসের মধ্যে এত সব কাজ করে দেখান। এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা হরীশ রাওয়ত ও প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পারগত সিংহের সামনেই গোটা ঘটনাটা ঘটে।
আজ এই খবর প্রকাশ্যে আসতে পঞ্জাব কংগ্রেস গোটাটাই অস্বীকার করেছে। বিজেপির ভুয়ো প্রচার বলে দাবি করেছে। চন্নী রবিবারই বলেছিলেন, কংগ্রেস সরকার নিজের প্রতিশ্রুতি মতো সব কাজই করবে। কিন্তু সিধুর সঙ্গে তাঁর বিবাদ নিয়ে চন্নী বা অন্য কেউ মুখ খোলেননি। উল্টে অমরেন্দ্র এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরে তাঁর কাজেও সিধু একই ভাবে নাক গলাতেন। অমরেন্দ্র বরং চন্নীকে ‘গুড বয়’ বলে আখ্যা দেন।
অমরেন্দ্র আগেই ঘোষণা করেছেন, তিনি নতুন দল গড়বেন। বিজেপির সঙ্গেও হাত মেলাবেন। তবে তার আগে কৃষক আন্দোলন মেটানোর চেষ্টা করবেন। কংগ্রেস মনে করছে, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবের নির্বাচনের আগে মোদী সরকার তথা বিজেপি যে কোনও উপায়ে কৃষক আন্দোলনে ইতি টেনে ফায়দা তোলের চেষ্টা করবে। অমরেন্দ্রর কথায় তারই ইঙ্গিত মিলছে। হরীশ রাওয়তের অবশ্য দাবি, এত দিন ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি দায়বদ্ধতার কথা বলা অমরেন্দ্র বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে কংগ্রেসের কোনও সমস্যা নেই। তাঁর যুক্তি, ‘‘যে বিজেপি গত ১০ মাস ধরে কৃষকদের দিল্লির সীমানায় বসিয়ে রেখেছে, তাদের কি কৃষকেরা ক্ষমা করতে পারেন? পঞ্জাব কি ক্ষমা করতে পারবে?’’