পঞ্জাব এবম হরিয়ানা হাই কোর্ট। ছবি সংগৃহীত।
হরিয়ানার নূহ ও গুরুগ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ভাঙা নিয়ে কড়া অবস্থান নিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। বাড়ি-দোকান ভাঙা বন্ধ করার নির্দেশ দিতে গিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, রাজ্য সরকার কি একটি সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করছে? বিচারপতিরা বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তাতে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, কোনও নির্দেশ না থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নাম করে বাড়িগুলি ভাঙা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়াকেও মেনে চলা হয়নি। এর পরেই হাই কোর্টের দুই বিচারপতি জি এস সান্ধাওয়ালিয়া ও বিচারপতি হরপ্রীত কউর হরিয়ানা সরকারকে বুলডোজ়ার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
নূহ ও গুরুগ্রামে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পর হরিয়ানার স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী অনিল ভিজ বলেছিলেন, বুলডোজ়ারকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গতকাল সেই মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতিরা ব্রিটিশ লেখক ও ইতিহাসবিদ লর্ড অ্যাক্টনের উক্তিকে তুলে ধরেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় দুর্নীতিও প্রবল ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। হাই কোর্টের মন্তব্য, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের ঘর ভাঙায় প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে?’’ গত দুই সপ্তাহে কোন কোন বাড়ি ভাঙা হয়েছে, হলফনামা দিয়ে তা জানানোর জন্য হরিয়ানা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এদিকে, নূহ-গুরুগ্রাম সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের জেরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে বয়কট করতে কোনও কোনও সংগঠন উস্কানি দিয়ে চলেছে বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সামনে বিষয়টির উল্লেখ করে কঠোর পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তিনি। সিব্বল বলেন, গুরুগ্রামে ভয়ঙ্কর প্রচার চালানো হয়েছে। বলা হয়েছে, মুসলিম সম্প্রদায়ের কাউকে যদি আপনি কাজে রাখেন, তাহলে আপনি একজন ‘গদ্দার’। সুপ্রিম কোর্টের সামনে আরও অভিযোগ এসেছে, ঘৃণা ভাষণ না দিতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের সভাগুলিতে। অন্তত ২৭টি সভা থেকে ঘৃণা ভাষণ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা