শাহিন বাগে চলছে দেহতল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
গত ৩০ জানুয়ারি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার সামনে সিএএ-এনআরসি বিরোধী মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল এক ‘নাবালক’। ১ ফেব্রুয়ারি শাহিন বাগে শূন্যে গুলি চালিয়েছে কপিল গুজ্জর নামে এক ব্যবসায়ী। আবার গতকাল রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ জামিয়ার সামনে ফের গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ লাল দু’চাকায় সওয়ার এক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে এ বার নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেরাই নিয়েছেন জামিয়া আর শাহিন বাগের আন্দোনকারীরা। দু’জায়গাতেই প্রতিবাদের মূল মঞ্চের দিকে এগোতে গেলে পুরোদস্তুর শরীর-তল্লাশি করছেন স্থানীয় যুবকরা। তাঁদের দাবি, এ জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় পুলিশই।
তল্লাশির ‘দায়িত্বে থাকা’ এমনই এক জন বললেন, ‘‘উপায় কী? সরকার যদি নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না-পারে, উল্টে প্ররোচনামূলক কথা বলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটান নেতা-মন্ত্রী, তবে নিজেরাই সাবধান হওয়া ছাড়া গতি নেই।’’ একই সঙ্গে ইঙ্গিত, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শাহিন বাগের আশেপাশে সভায় এসে যে ভাবে ধর্মীয় বিভাজনের কথা বলছেন, তাতে গুলি চলার মতো ঘটনার সম্ভাবনা ভোটের মুখে আরও বাড়তে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। সেই কারণে দেহ বা ব্যাগ তল্লাশি থেকে যাতে কেউ বাদ না-পড়েন, তা নিশ্চিত করতে ত্রিপল দিয়ে আড়াল তৈরি করা হয়েছে মহিলাদের জন্য। যেখানে তাঁদের দেহতল্লাশি করছেন মহিলারাই।
এ দিকে, গত রাতে জামিয়ার ৫ ও ৬ নম্বর গেটের মধ্যে গুলি চলার যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে পুলিশের দাবি, সেখানে কার্তুজের খালি খোল পাওয়া যায়নি। তবে জামিয়ানগর থানায় দায়ের হয়েছে এফআইআর। দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজও। প্রসঙ্গত, লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে জামিয়া এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আহত পড়ুয়ার সংখ্যা যথাক্রমে ৬৯ এবং ৬ জন।
জামিয়া-শাহিনবাগকে ঘিরে রাজনীতিকদের চাপানউতোরও অব্যাহত। এ দিন এই দুই জায়গায় প্রতিবাদ-আন্দোলনকে আক্রমণ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কী করে একজন মুখ্যমন্ত্রী বলেন বোলি নেহি শুনেগা তো গোলি মার দেঙ্গে! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও একই কথা বলছেন। রাজনৈতিক ভাবে আপনার আর কিছু বলার নেই। তা বলে আপনি সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলবেন, আর যে দেশের হয়ে কথা বলবে, তাকে উগ্রপন্থী, দেশদ্রোহী, পাকিস্তানি বানাবেন, তা হলে আমাদের বাক স্বাধীনতা কোথায় যাবে?’’ এমআইএমের লোকসভা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বিজেপিকে বিঁধেছেন সাম্প্রতিক গুলি চলার জন্য।