মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে স্কুলের মধ্যে দুই শিশুকে যৌননিগ্রহের অভিযোগে যে প্রতিবাদ চলছে, তাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার শিন্ডে জানান, স্কুলের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসলে সরকারের বদনাম করতে চাইছে বিরোধীরা। সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে বলেও জানান তিনি। বিরোধীরা এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী শনিবার মহারাষ্ট্রে বন্ধ ঘোষণা করেছে। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা এবং কংগ্রেসের জোট বন্ধ ডেকেছে শনিবার।
বদলাপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে বুধবার শিন্ডে বলেন, ‘‘যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই বহিরাগত। বিক্ষোভে যে স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন, তাঁদের হাতে গোনা যায়। এই বিক্ষোভের নেপথ্যে আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। সরকারের বদনাম করার চেষ্টা চলছে। এই ধরনের ঘটনা নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করছেন, তাঁদের লজ্জিত হওয়া উচিত।’’
শিন্ডে আরও বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা যা দাবি করেছিলেন, সবই মেনে নিয়েছেন মন্ত্রী গিরিশ মহাজন। কিন্তু তাতেও আন্দোলন থামেনি। এর থেকেই পরিষ্কার, ওদের উদ্দেশ্য এই সরকারকে বদনাম করা।’’
বদলাপুরের ওই ঘটনা গত সপ্তাহের। অভিযুক্ত স্কুলের সাফাইকর্মীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া, স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা, শ্রেণিশিক্ষিকাকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার পড়ুয়াদের নিরাপত্তা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ঠাণে শহরে বহু মানুষ পথে নামেন। অভিভাবকদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষও। মঙ্গলবার দীর্ঘ ক্ষণ রেল অবরোধ করা হয়। প্রায় ১০ ঘণ্টা ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয় এই বিক্ষোভের জেরে। বিক্ষোভকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ‘লড়কি বহিন যোজনা’র প্ল্যাকার্ড ছিল। মাসিক ১৫০০ টাকার সহায়তা প্রত্যাখ্যান করার দাবি উঠেছে। রেল অবরোধ করা হয়েছে। এ ভাবে কারা প্রতিবাদ করে? আসলে সরকারের ওই প্রকল্পে বিরোধীদের ঘুম উড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই এই চক্রান্ত।’’
মঙ্গলবারের বিক্ষোভ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। তাদের লক্ষ্য করে প্রতিবাদীরা ঢিল ছোড়েন। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জও করে পুলিশ। ওই ঘটনায় চারটি এফআইআর করে মোট ৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।