রাহুল গাঁধীর ইস্তফার পঞ্চাশ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তাঁর উত্তরসূরি খুঁজে উঠতে পারলেন না কংগ্রেস নেতারা। যদিও বিদেশ থেকে ফিরে উত্তরপ্রদেশের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে সক্রিয় হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
আজ দিল্লির তুঘলক লেনে রাহুল গাঁধীর বাসভবনেই উত্তরপ্রদেশের কিছু নেতাকে ডেকে পাঠান প্রিয়ঙ্কা। ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভাকে সামনে রেখে দলের সংগঠনকে কী করে নতুন করে ঢেলে সাজানো যায়, তা নিয়েই বৈঠক করেন তিনি। যদিও তার আগে রাজ্যে ১২ টি আসনে উপনির্বাচন আছে। যেগুলির সিংহভাগই বিজেপির দখলে। এই আসনগুলিতেও জয়ের জন্য রণনীতি তৈরির কাজ শুরু করলেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে রাহুল গাঁধী উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের দায়িত্ব প্রিয়ঙ্কা ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দিয়ে সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন প্রিয়ঙ্কাকে। আর পশ্চিমে ছিলেন সিন্ধিয়া। সম্প্রতি সিন্ধিয়ার ইস্তফার পর গোটা উত্তরপ্রদেশই প্রিয়ঙ্কার কাঁধে দেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। আনুষ্ঠনিক ঘোষণা হয়নি বটে। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা আজ গোটা রাজ্য নিয়েই আলোচনা করেছেন।
লোকসভার পরেই রাজ্যের জেলা কমিটি ভেঙে দিয়েছেন তবে প্রিয়ঙ্কা। আজ উত্তরপ্রদেশের সভাপতি রাজ বব্বরের বিরুদ্ধেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বৈঠকে। ভোটের আগেই তিনি রাজ বব্বরকে বদল করতে চেয়েছিলেন। বাদ সেধেছিলেন রাহুলই। আজকের বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা তাঁর টিমের তিন সচিবকে ডেকে পাঠান। তাঁদের নির্দেশ দেন, ৪০ বছরের নীচের কর্মীদের খুঁজে বের করুন, যাঁরা দলকে চাঙ্গা করতে পারবেন। কৃষক, দলিত, ওবিসি, ছাত্র নেতাদেরও খুঁজুন। সংগঠনে এত দিন যাঁদের উপেক্ষা করা হয়েছে, তাঁদেরও গুরুত্ব দিতে হবে।
রাহুল নিজে অবশ্য আজ মহারাষ্ট্রে সদ্যনিযুক্ত সভাপতি বালাসাহেব থরোটের সঙ্গে দেখা করেছেন। দু’দিন আগে তাঁকে যখন নিয়োগ করা হয়েছিল, এআইসিসির পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়-‘কংগ্রেস সভাপতি’ এই নিয়োগ অনুমোদন করেছেন। আজ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে রাহুল যখন মহারাষ্ট্রের সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন, তখন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখানে সনিয়াকে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন বলে সম্বোধন করা হয়েছে। রাহুলের নামের আগে ‘কংগ্রেস সভাপতি’ লেখা হয়নি।
কংগ্রেসের সূত্রের মতে, রাহুল নিজেই এমনটি লেখার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ, তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। সে কারণে ‘কংগ্রেস সভাপতি’ কথাটি জাহির করতে চাইছেন না। আবার দলের সংগঠনের যে বদল জরুরি, সেগুলিও না করলেই নয়। কোনও রাজ্যের সভাপতি নিয়োগের বিষয়টি সব সময়েই কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি করেন। রাহুল ধীরে ধীরে তাতে আগ্রহ দেখানোয় দলের অনেকে আশার আলোও দেখছেন। তাঁরা মনে করছেন, আজ-নয়-কাল রাহুলকে সভাপতি পদে থেকে যেতে রাজি করানো যাবে।