প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ছবি সৌজন্য় টুইটার।
অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার আর এস দারাপুরির বাড়িতে যাওয়ার সময় লখনউয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেফতার হন ৭৬ বছরের দারাপুরি। তাঁরই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তখনই এই ঘটনার সূত্রপাত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, ওই দিন দলীয় সমর্থকদের নিয়ে তিনি যখন দারাপুরির বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁর কনভয় আটকায় লখনউ পুলিশ। অভিযোগ, এর পরই মহিলা পুলিশকর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাঁদের মধ্যে এক জন তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন বলেও দাবি করেন প্রিয়ঙ্কা। অন্য এক জন মহিলা পুলিশকর্মী তাঁর গলা টিপে ধরেন বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার পর এক সমর্থকের স্কুটারে চেপে ফের দারাপুরির বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু দু’কিলোমিটারের মধ্যেই ফের তাঁর পথ আটকায় পুলিশ। শেষে হেঁটে দারাপুরির বাড়িতে পৌঁছন তিনি। রাজ্য সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেই অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী।
এই ঘটনা ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো হয়েছে, প্রিয়ঙ্কার এই দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “যদি পুলিশ তাদের গাড়ি নিয়ে আমাদের গাড়ির পথ আটকায়, আমাকে যদি পায়ে হেঁটে যেতে না দেওয়া হয়, আমাকে ঘিরে ধরা, ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া, গলা টিপে ধরা, এ সব তা হলে কেন, কী কারণে? সরকার ও প্রশাসনের মদত আছে বলেই এমনটা ঘটেছে।” এর পরই তিনি বলেন, “পুলিশের দমননীতির শিকার এমন প্রত্যেক নাগরিকের পাশে আমি থাকব। এটাই আমার সত্যাগ্রহ।”
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রিয়ঙ্কার এই সব অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে পাল্টা দাবি করেছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (প্রোটোকল) উদ্দেশ করে লেখা একটি চিঠিতে সার্কল অফিসার মডার্ন কন্ট্রোল রুম অর্চনা সিংহ বলেন, “বেশ কয়েকটি বিষয় (যেমন হেনস্থা করা, ঘাড় ধরে টেনে তোলা) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যা কিনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। নিষ্ঠার সঙ্গে আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি।” সার্কল অফিসার পাল্টা দাবি করেছেন, “আমি প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর গন্তব্যস্থলের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলাম। এবং সেটা নিরাপত্তার কারণেই। কিন্তু তাঁর দলের কর্মীরা এই তথ্য দিতে অস্বীকার করেন।”
আরও পড়ুন: ইরফান হাবিবের নামে গুন্ডামির অভিযোগ রাজ্যপালের!
আরও পড়ুন: শীতের কামড়ে আজ কি নয়া রেকর্ড?
অন্য দিকে, রাজ্য সরকারের মুখপাত্র শলভ মানি ত্রিপাঠী এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতি জারি করে বলেন, “রাজনীতির স্বার্থে মহিলা পুলিশ আধিকারিককে বলির পাঁঠা বানাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। পরিবারের সদস্যের মৃত্যু সত্ত্বেও নিজের কর্তব্য পালন করেছেন ওই আধিকারিক। এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগে ব্যথিত ওই আধিকারিক।” লখনউ পুলিশের এসএসপি কলানিধি নৈথানি-ও বলেন, “পুলিশ আধিকারিক অর্চনা সিংহের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
শহরের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির কথা ভেবেই তাঁকে আটকানো হয়েছে, পুলিশের এমন দাবি প্রসঙ্গে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কী ভাবে অবনতি হত, শান্তিপূর্ণ ভাবেই যাচ্ছিলাম? যদি তারা গ্রেফতার করতে চাইত, সেটা করতে পারত! কিন্তু আমাকে আটকানোর কোনও অধিকার নেই পুলিশের।”