ছবি: সংগৃহীত।
বেসরকারিকরণের ইঙ্গিত এবার রেলের জনসংযোগ বিভাগের কাজকর্মেও। সামাজিক মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন জনসংযোগের প্রধান দায়িত্ব পেশাদার বেসরকারি সংস্থাকে দিতে চলেছে রেল মন্ত্রক।
সম্প্রতি রেল বোর্ডের তরফে বিভিন্ন জোনের জেনারেল ম্যানেজারদের পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া সামলানোর জন্য বিশেষ দলে টিম লিডার, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার, কনটেন্ট এডিটর, ভিডিয়ো এডিটর-সহ নানা পদে পেশাদারদের নিয়োগ করা হবে। রেলের বিভিন্ন জোন ছাড়াও তাদের নিজস্ব উৎপাদক সংস্থাতেও ওই একই নির্দেশ পৌঁছেছে বলে খবর।
রেলের বিভিন্ন জোনে এখন জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব মূলত সামলান মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক। তাঁকে সাহায্য করেন আরও কয়েকজন আধিকারিক এবং পরিদর্শক। দফতরের অন্যান্য দায়িত্ব পালনের জন্য আরও কিছু কর্মী থাকেন। এখন ওই সমস্ত কর্মীদের বাইরে নতুন একদল পেশাদারকে নিয়োগ করা হবে। তাঁদের দায়িত্ব হবে ফেসবুক, টুইটার বা লিঙ্কড ইনের মতো সামাজিক মাধ্যমের উপযোগী উপাদান দ্রুত তৈরি এবং ওই মাধ্যমে প্রকাশিত মতামতের উপর ভিত্তি করে জনসংযোগের কৌশল তৈরি করা। রেল সূত্রে খবর, ওই বিশেষ দলের উপর বিভিন্ন সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবর, ফেসবুক বা টুইটারে প্রকাশিত মতে নজর রাখার দায়িত্ব বর্তাবে। ওই সব তথ্য বিশ্লেষণ করে তার রিপোর্টও কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত দিতে হবে।
এক রেল কর্তা জানান, টিভির খবরে নজর রাখা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার-বিষয় তৈরির কাজে বাইরের সংস্থার সাহায্য নেওয়ার চল বর্তমানে আছে। নতুন ব্যবস্থায় সবটাই এক ছাদের তলায় নিয়ন্ত্রিত হবে। কিন্তু, পুরনো কর্মীদের একাংশ উদ্বৃত্ত হয়ে পড়লে তাঁদের কী হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ওই কর্তা।
কেন এই ব্যবস্থা? সুরেশ প্রভু বা পীযূষ গয়াল সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হলেও সরকারি কর্মীরা সামাজিক মাধ্যমের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। রেল কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, জনসংযোগ বিভাগের কর্মীদের অনেকেই ঢিমেতালে চলেন। রেলে বিপদ ঘটলে কর্তৃপক্ষের তরফে নেওয়া ব্যবস্থার কথা দ্রুত নাগরিকদের জানানোর পাশাপাশি তাঁদের প্রতিক্রিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যায়। নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়। এক রেল-কর্তা বছরখানেক আগে কলকাতা মেট্রোয় আলিঙ্গন-বিতর্কের কথা বলেন। ওই ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে দেরি হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ সমালোচিত হন। ওই রেল-কর্তার মন্তব্য, ‘‘ঘটনা ঘটলে দ্রুত কাজ করতে পারেন, এমন পেশাদার কর্মী ছাড়া আধুনিক জনসংযোগের চাহিদা সামাল দেওয়া মুশকিল।’’ বেসরকারি পেশাদার সংস্থার হাতে রেলের জনসংযোগের দায়িত্বের প্রায় সবটাই চলে গেলে তা চমকসর্বস্ব হতে পারে বলে আশঙ্কা রেলের আধিকারিকদের একাংশের। নতুন পরিকল্পনায় কেন্দ্রের শাসক দলের আইটি সেলের ‘ছায়া’ দেখছেন তাঁদেরই কেউ কেউ।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।