জঙ্গলরাজ বনাম পরিযায়ী শ্রমিক
Bihar Election 2020

বিহারের ভোট-প্রচারে মোদী-রাহুল বাগ্‌যুদ্ধ

পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার যে জমে থাকা এই ক্ষোভ ব্যালট-বাক্সে উগরে দিতে পারেন, সেই আশঙ্কা মোদী-নীতীশের এনডিএ জোটের আছে। সেই কারণেই অনেক আগে থেকে ওই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩৫
Share:

সাসারামের সভায় মোদী-নীতীশ। শুক্রবার। পিটিআই

বিধানসভার ভোট প্রচারে বিহারে প্রধানমন্ত্রীর পা-পড়ার দিনেই পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে আক্রমণ শানালেন রাহুল গাঁধী। অভিযোগ তুললেন কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার। বিরোধী মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদবের কটাক্ষ, করোনার ‘ভয়ে’ ১৪৪ দিন বাড়ি-বন্দি থাকা নীতীশ কুমারের দেখা মিলেছে ভোটের মুখে। পাল্টা আক্রমণে প্রায় প্রত্যেক জনসভায় লালুপ্রসাদের জমানার ‘জঙ্গলরাজের’ কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তুলে ধরেছেন ‘কেন্দ্রে ও বিহারে এনডিএ সরকারের ডবল ইঞ্জিনের টানে’ দ্রুত উন্নয়নের খতিয়ান। শুনিয়েছেন, কী ভাবে নীতীশের প্রথম দশ বছরে বিহারের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। আর তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের পাল্টা প্রশ্ন, দশ বছরে বিহারে লালুপুত্রের টিকি দেখা যায়নি কেন?

Advertisement

হঠাৎ লকডাউন ঘোষণার জেরে চরম দুর্দশার মুখে পড়তে হয়েছিল ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে। কাজ গিয়েছে। ছাদ কেড়েছেন বাড়ির মালিক। পকেট খালি। কবে কারখানার দরজা ফের খুলবে, তা অজানা। এমন দেওয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থায় হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটেও বাড়ির পথ ধরতে বাধ্য হয়েছিলেন অনেকে। তা করতে গিয়ে রাস্তাতেই প্রাণ খুইয়েছেন বেশ কিছু জন। এই ক্ষোভকে ব্যালট বাক্সে টেনে আনতে রাহুল এ দিন বলেছেন, খাবার, জল ছাড়াই হাজার কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয়েছে বিহারে বাড়ি ফিরতে মরিয়া শ্রমিকদের। প্রশ্ন ছুড়েছেন, “তখন প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে ছিলেন? কোনও সাহায্য করেছেন?” রাহুলের অভিযোগ, লকডাউন ঘোষণার সময়ে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথাতেই রাখেনি কেন্দ্র। তাঁর কথায়, “এক দল পরিযায়ী শ্রমিক আমাকে বলেছিলেন, লকডাউন ঘোষণার আগে মাত্র দু’দিন সময় পেলেও বাড়ি ফিরে যেতে পারতেন তাঁরা।”

পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার যে জমে থাকা এই ক্ষোভ ব্যালট-বাক্সে উগরে দিতে পারেন, সেই আশঙ্কা মোদী-নীতীশের এনডিএ জোটের আছে। সেই কারণেই অনেক আগে থেকে ওই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন তাঁরা। নিখরচার রেশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ছট পুজোর পর পর্যন্ত। কাজ হারিয়ে গ্রামে ফেরা শ্রমিকদের জন্য চালু করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী রোজগার অভিযান প্রকল্প। একই সঙ্গে কৌশলে সমালোচনার তিরের মুখ মোদী বিরোধীদের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, কেন্দ্রে তাঁর আর বিহারে নীতীশ সরকারের যুগলবন্দিতে এ রাজ্যে উন্নয়ন যে গতিতে হয়েছে, তা আগে হলে, কাজের খোঁজে এত জনকে পাড়িই দিতে হত না ভিন্ রাজ্যে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কমল নাথের মা, বোন সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য

আরও পড়ুন: সংসদীয় কমিটিতে ফেসবুকের হাজিরা​

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদের জমানার দিকে ইঙ্গিত করে মোদী এ দিন জিজ্ঞাসা করেছেন, যে রাজত্বে খুন, ডাকাতি, জাতি সংঘর্ষ, দুর্নীতি, মহিলাদের উপরে অত্যাচার লেগেই থাকত, উৎসাহ জোগানো হত নকশালদের, সেই জঙ্গলরাজ ফেরত চান? নাকি চাইবেন যে, জারি থাকুক এখনকার উন্নয়নের ধারা? পোক্ত থাকুক আইন-শৃঙ্খলা? আরজেডির নির্বাচনী প্রতীক লন্ঠন। মোদীর কটাক্ষ, “বিহারে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। দিন গিয়েছে লন্ঠনের।”অন্য দিকে, তেজস্বীর দাবি, বিহার ভোটের পরে লালু জামিন পাবেন। আর বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে নীতীশের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement