সন্ন্যাসীর বক্তৃতা ঘিরে অসম এখন সরগরম। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ তাঁদের সন্ন্যাসীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করলেও বিতর্ক থামছে না। দু’দিন আগে গুয়াহাটিতে মামলা দায়েরের পর কংগ্রেস আজ শিলচরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে। তাঁদের দাবি— অভিযুক্ত পার্থ মহারাজকে গ্রেফতার করতে হবে।
বিতর্কের সূচনা হয়েছিল শুক্রবার শিলচরে। হিন্দু সংহতি নামে এক সংগঠন এখানকার গাঁধীভবনে যুব সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে বক্তৃতা করেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের পার্থ মহারাজ। অভিযোগ, তিনি মহাত্মা গাঁধী ও জওহরলাল নেহরুর সমালোচনায় আগাগোড়া মুখর ছিলেন। ‘গাঁধীজি জাতির জনক নন, ঘাতক’— এমন মন্তব্য করতেও ছাড়েননি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। পর দিন দিসপুর থানায় পার্থ মহারাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরই মধ্যে গত কাল পার্থ মহারাজকে ছয় মাসের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। ৬ মাস পর তাঁকে আর শিলচরে যোগ দিতে দেওয়া হবে না। শাস্তিমূলক বদলি হিসেবে তাঁকে দক্ষিণ ভারতে কাজ করতে হবে। সঙ্ঘের পক্ষে উত্তর-পূর্ব প্রধান সাধনানন্দ মহারাজ বলেন, ‘‘তাঁর এই ধরনের বক্তৃতায় সঙ্ঘ লজ্জিত। এমন কথা-আচরণ আমাদের আদর্শ ও চিন্তাভাবনার পরিপন্থী।’’
শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটি পার্থ মহারাজের শাস্তিতে সন্তুষ্ট নয়। তাঁরা তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে গাঁধী ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে। সাধারণ সম্পাদক পার্থরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে সবাই শ্রদ্ধা করেন। বন্যা, ভূমিকম্প সহ যে কোনও দুর্যোগে তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন।’’ কিন্তু এমন প্রতিষ্ঠানের এক সন্ন্যাসী গাঁধীজি-নেহরু সম্পর্কে যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, তাতে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন। এমন কথাবার্তা মানা যায় না। পার্থ মহারাজের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বক্তৃতা করেন কিশোর ভট্টাচার্য, শরিফুজ্জামান লস্কর, সঞ্জীব রায়, সীমান্ত ভট্টাচার্য ও রাহুল আলম লস্কর। বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল পার্থ মহারাজের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘তিনি একটু আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন।’’ কংগ্রেস নেতারা দিলীপবাবুর এই মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন।