উপকূলের কাছে ‘ডেনা’ ধেয়ে আসতেই উত্তাল হচ্ছে ওড়িশার সমুদ্র। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ আসার আগেই ওড়িশার বাজার আগুন। আলু, পেঁয়াজ তো বটেই, বাকি সব্জিরও দাম বেড়েছে গত এক দিনের মধ্যেই। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন বাজারগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। সব্জির দাম বাড়তে পারে, এই আশঙ্কা করেই স্থানীয়েরা বাজারে ভিড় করছেন।
কটক, ভুবনেশ্বর-সহ রাজ্যের বেশির ভাগ প্রান্তেই এখন চড়চড়িয়ে দাম বাড়ছে সব্জির। কটকের ছত্রা বাজারের এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, রবিবার পর্যন্ত বাজারে আলুর দাম ছিল কেজি প্রতি ৩০ টাকা। পেঁয়াজ ছিল কেজি প্রতি ৪০ টাকা। কিন্তু ‘ডেনা’ আসার খবর ঘোষণা হতেই রাজ্যের বেশ কয়েকটি বাজারে আলুর দাম এক ধাক্কায় ২০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। পেঁয়াজ ৪০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা ছুঁয়েছে। টম্যাটোর দামও ১০০ ছুঁয়ে ফেলেছে।
এ ছাড়াও বিন্স, বেগুন, ঢেঁড়স-সহ বেশ কয়েকটি সব্জির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যাতে খাবারের অভাব না হয়, তা সোমবার থেকেই সব্জি এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করা শুরু করেছেন স্থানীয়েরা। বিশেষ করে আলু এবং পেঁয়াজের চাহিদাই বেশি বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কটকের এক বাসিন্দা নিবেদিতা বেহরা যেমন বলেছেন, ‘‘জানি না, ঘূর্ণিঝড়ের পর কী পরিস্থিতি হবে বাজারের। সরবরাহ কেমন থাকবে তা-ও স্পষ্ট নয়। আর তার জেরে সব্জির দামও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমার মতো অনেকেই আগেভাগে পর্যাপ্ত আলু এবং পেঁয়াজ কিনে রাখছি।’’
আলু, পেঁয়াজের চাহিদা তুঙ্গে ওঠায় দামও বাড়ছে। ছত্রা বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, আলুর গাড়ি রাজ্যে ঢুকছে না। ফলে আলুর জোগান কমেছে। তার জেরেই দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সম্পর্ক নেই। বেশ কয়েকটি বাজারে সব্জির দামবৃদ্ধির অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি নজরদারির আওতায় আনছে রাজ্য খাদ্য দফতর। খাদ্য সরবরাহ এবং গ্রাহক কল্যাণ মন্ত্রী ক্রুশ্না চন্দ্র পাত্র জানিয়েছেন, যে সব ব্যবসায়ী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সব্জির কালোবাজারি করছেন, সব্জি মজুত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘বাজারে বাজারে নজরদারি চালানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি আধিকারিকদের।’’ রাজ্যবাসীর কাছে মন্ত্রীর আবেদন, অহেতুক ভীত হয়ে সব্জি কেনার জন্য হুড়োহুড়ি করবেন না। রাজ্যে যথেষ্ট পরিমাণ সব্জির জোগান রয়েছে।
সোমবারই ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝিঁ। সেই বৈঠকে তিনি কালোবাজারির বিষয়টিতেও নজরদারি চালানো এবং পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে বলে মৌসম ভবন সূত্রে খবর। আছড়ে পড়ার সময় এটির সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিমি।