প্রতীকী ছবি।
তাঁদের তৈরি করোনা টিকাকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। সেরাম ইনস্টিটিউটের মুখ্য কার্যনির্বাহী আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, পুণের এই সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ডের ৫ কোটি ডোজ ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রয়েছে। ভারতে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকাকে করোনার বিরুদ্ধে ‘নিরাপদ এবং কার্যকর’ও বলেছেন পুনাওয়ালা। টিকার দামের ব্যাপারটিও জানিয়েছেন তিনি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সাধারণের জন্য ১ হাজার এবং সরকারের জন্য ২০০ টাকায় বিক্রি করা হবে কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজ। যদিও ভারত থেকে অন্য দেশে এই টিকা রফতানি করার অনুমতি এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের মার্চের মধ্যে ১০ কোটি কোভিশিল্ডের ডোজ তৈরির পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছিল এই সংস্থা। রবিবার টুইট করে সকলকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে পুনাওয়ালা লিখেছেন, ‘টিকা বানিয়ে মজুত করা নিয়ে ঝুঁকির কাজ শেষ হল। কোভিশিল্ড ভারতের প্রথম কোভিড-১৯ টিকা যা অনুমোদিত, নিরাপদ, কার্যকর এবং আগামী সপ্তাহে দেওয়ার জন্য তৈরি’।
পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, প্রতি মিনিটে প্রায় ৫ হাজার কোভিশিল্ডের ডোজ তৈরি করতে পারে তাঁদের সংস্থা। এই টিকা যাতে বিদেশে সরবরাহ করা যায় সে ব্যাপারেও সরকারের কাছে অনুমতি চাইবেন তাঁরা। এ ব্যাপারে পুনাওয়ালা বলেছেন, “সৌদি আরব ছাড়াও একাধিক দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে। কিন্তু অনুমতি না থাকায় এখন আমরা টিকা রফতানি করতে পারব না। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করব কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাতে বিভিন্ন দেশে এটি আমরা বিক্রি করতে পারি।’’ তবে এখনই যে সরকার টিকা রফতানির অনুমতি দেবে না তা-ও জানান আদার।
কত দাম হতে পারে এই টিকার? আদার জানান, “সরকারকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হবে কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজ। আর খোলা বাজারে ১ হাজার টাকায় মিলবে এই টিকা।”
যদিও ভারতে কবে থেকে গণ টিকাকরণের কাজ শুরু হবে সে ব্যাপারে কেন্দ্র সরকারের তরফে এখনও অবধি কিছু জানানো হয়নি। ইতিমধ্যেই ভারত বায়োটেকের তৈরি টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। কারণ এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল এখনও চলছে।
ভারতে প্রথম পর্বে প্রায় ৩০ কোটি দেশবাসীকে গণ টিকাকরণ অভিযানের আওতায় নিয়ে আসতে চলেছে বলে জানিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মীর টিকাকরণ হবে। দ্বিতীয় ধাপে টিকা দেওয়া হবে প্রায় দু’কোটি ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারকে। এঁরা হলেন পুরকর্মী, সেনা-আধা সেনা ও পুলিশ। তৃতীয় ধাপে ৬০ বছরের বেশি বয়সি ২৬ কোটি দেশবাসীর টিকাকরণ হবে। চতুর্থ ধাপে ৫০-৬০ বছর বয়সি যাঁরা হৃৎপিণ্ড, কিডনি, ফুসফুসের সমস্যায় দীর্ঘ দিন ভুগছেন, তাঁদের টিকা দেওয়া হবে। এই সংখ্যাটা প্রায় এক কোটি। এই ৩০ কোটির মধ্যে প্রথম দু’টি ধাপের তিন কোটি ব্যক্তির তালিকা অধিকাংশ রাজ্যের থেকে কেন্দ্রের কাছে জমা পড়েছে।