এমন পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে রাজধানীর রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
সক্রিয় রাজনীতিতে থাকার সময় দিল্লি জুড়ে তাঁকে নিয়ে এমন ফেস্টুন, পোস্টার দেখা যায়নি। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে রাতারাতি রাজধানীর সব বড় সড়কের লাইট পোস্ট, বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে শহরের আনাচে-কানাচে ফেস্টুন-পোস্টারে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উজ্জ্বল উপস্থিতি। এই সব পোস্টার-ব্যানারে দিল্লিকে কার্যত মুড়ে ফেলেছে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার। তাতে লেখা, ‘‘ইতিহাসে এই প্রথম বার-শিক্ষক দিবসে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় শিশুদের পড়াবেন। চার সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে ১১টায়। টিভিতে অবশ্যই দেখুন।’’
দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর দেশে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষে ৪ সেপ্টেম্বর দিল্লি সরকারের নিমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি যে দিল্লির একটি স্কুলের ছাত্রদের পড়াবেন— সেই খবর আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। এ বার তা নিয়ে রীতিমতো প্রচারে নেমেছে কেজরীবাল সরকার।
শিক্ষক দিবস নিয়ে রাজনৈতিক স্তরে এমন হইচই নতুন নয়। গত বছরই শিক্ষক দিবসের আগের সন্ধ্যায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোটা দেশের স্কুলে কচিকাঁচাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বারও এমন অনুষ্ঠান করবেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, শিক্ষক দিবসের আগের দিন দিল্লির মানেকশ প্রেক্ষাগৃহ থেকে ছাত্রদের সঙ্গে ভিডিও-বার্তায় কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু মোদীর জন্য এ বার ফাঁকা মাঠ থাকছে না। দিল্লি সরকারের আমন্ত্রণে ছাত্রদের পড়াবেন প্রণববাবুও। রাজনীতিকদের মতে, নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে কেজরীবাল এ বার গোড়া থেকেই তাঁর প্রশাসনিক নীতিতে শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাই শিক্ষা বাজেট এক লপ্তে অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতিকে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর জন্য ডেকে কেজরীবাল আসলে তাঁর সরকার সম্পর্কেই মানুষের ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে চাইছেন। সেই কারণে জোর দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞাপনে।
কেজরীবাল সরকারের বিজ্ঞাপনের জন্য এ বার বাজেটে ৫১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই নিয়ে সমালোচনায় নেমেছিল কংগ্রেস এবং বিজেপি। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে দিল্লি জুড়ে পোস্টার-ব্যানার লাগানোর পর কংগ্রেস আজ নীরব। প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেস মুখপাত্ররা শুধু বলেন, রাষ্ট্রপতি জ্ঞানী মানুষ। তিনি ছাত্রদের পড়াবেন, এতো ভাল কথা!