প্রতীকী ছবি।
রাস্তা না-থাকার জেরে ফের রোগীর মৃত্যু হল লখিমপুরে। গত কয়েক বছর ধরে মাজুলি-লখিমপুর এলাকায় রাস্তা ও সেতু না-থাকার জেরে অনেক রোগী মারা গিয়েছেন। প্রসূতিদের নৌকায় বা বাঁশের ভেলায় বেঁধে হাসপাতালে আনতে হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস মিললেও সড়ক তৈরি হয়নি।
পূর্ব নারায়ণপুরের চকিয়াল চাপড়ির তরুণ চকিয়ালের স্ত্রী ববিতা মিলি চার দিন ধরে পেটের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। রাস্তা না-থাকায় গত কাল তাঁকে ঠেলা গাড়িতে চাপিয়ে চার কিলোমিটার নিয়ে গিয়ে সড়কে তোলা হয়। সেখান থেকে ভাড়া গাড়িতে নায়ারণপুর মহাত্মা গাঁধী আদর্শ হাসপাতালে আনা হয় ববিতাদেবীকে। কিন্তু চার সন্তানের মা ববিতাদেবীকে বাঁচানো যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার নদীগুলির উপরে সেতু নেই। গ্রামে নেই গাড়ি ঢোকার রাস্তা। তাই শরীর খারাপ হলে চট করে কেউ হাসপাতালে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারেন না। পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ক্ষমতায় আসা বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ওই এলাকারই সাংসদ ছিলেন। মাজুলি মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্র। কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি মাজুলি-লখিমপুরের সীমানাবর্তী বহু এলাকা।
গত বছর এই এলাকাতেই গর্ভবতী দীপালি দোলেকে প্রসব বেদনা ওঠায় তিনটি নদী ও ৯ কিলোমিটার রাস্তা একটি বেঞ্চে বেঁধে, নৌকো ও ঠেলা গাড়িতে করে তাঁকে হাসপাতালে আনতে হয়েছিল। গত বছর অক্টোবরে ৭০ বছরের এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নৌকায় হাসপাতালে আনা হচ্ছিল। পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। সেপ্টেম্বরে লখিমপুরের এক গর্ভবতী মহিলাকে ঠেলায় চাপিয়ে মাজুলির হাসপাতালে আনার সময়ে রাস্তায় তাঁর প্রসব হয়ে যায়। অগস্টে হাতে টানা গাড়িতে গড়মূর হাসপাতালে আনার পথে মারা যান অসুস্থ এক শিক্ষক। ফেব্রুয়ারিতে সড়কের অভাবে পঞ্চাশ বছর বয়সি অসুস্থ ব্যক্তিকে সাত কিলোমিটার রাস্তায় ঠেলায় চাপিয়ে হাসপাতালে আনে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে মাজুলির হাসপাতালে মারা যাওয়া ভাইকে সাইকেলে চাপিয়ে বাড়ি ফেরেন দাদা। ঘটনা নিয়ে শোরগোল হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পূর্ত দফতরের অফিসারের এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সেতু ভেঙে জলে পড়েন। তার পরেও হাল ফেরেনি যোগাযোগের।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।