মোদী সরকারকে আক্রমণ প্রশান্ত কিশোরের। —ফাইল চিত্র।
নোটবন্দির সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) তুলনা টানলেন ভোটকুশলী তথা রাজনীতিক প্রশান্ত কিশোর। তাঁর দাবি, নোটবন্দির মতো এনআরসি হলেও দেশের দরিদ্র এবং প্রান্তিক মানুষই হেনস্থা হবেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রবিবার সকাল থেকেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অসম-সহ উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যে। তার মধ্যেই এ দিন সকালে টুইটারে প্রশান্ত কিশোর লেখেন, ‘‘দেশের সর্বত্র এনআরসি করার পরিকল্পনা আসলে নাগরিকত্ব বিমূল্যকরণেরই (ডিমনিটাইজেশন অব সিটিজেনশিপ)সমান। অন্য কিছু প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তা অবৈধ। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, এতেও দরিদ্র এবং প্রান্তিক মানুষরাই প্রতিকূলতার মুখে পড়বেন।’’ এনআরসি মানছেন না বোঝাতে টুইটে #নটগিভিংআপও লেখেন তিনি।
প্রশান্ত কিশোরের টুইট।
শুরু থেকেই এনআরসি-র বিরোধিতা করে আসছেন প্রশান্ত কিশোর। নাগরিক সংশোধনী আইনেরও বিরোধী তিনি। তার জেরে নিজের দলের সঙ্গেই মতবিরোধ তৈরি হয়েছে তাঁর। সংসদে নাগরিক সংশোধনী বিলেক সায় জানানোয় প্রকাশ্যেই দলের সমালোচনা করেছিলেন জেডিইউ সহ সভাপতি প্রশান্ত কিশোর। যে কারণে দলের সঙ্গে তাঁর সমীকরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এর মধ্যেই শনিবার দিল্লিতে নীতীশ কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রশান্ত কিশোর। মতপার্থক্যের জেরে দলনেতাকে তিনি নিজের ইস্তফাপত্রও দিতে চান বলে দলীয় সূত্রে খবর। যদিও তা অস্বীকার করেন নীতীশ। ইস্তফা দেওয়ার কথা নিজেই উড়িয়ে দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। নীতীশের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আলোচনার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘বরাবর এনআরসির বিপক্ষে সওয়াল করে এসেছে দল। নীতীশ তা কার্যকর করার বিরুদ্ধেই। এনআরসি না হলে নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে আপত্তি নেই ওঁর। কারণ ওই বিল নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে। তবে এনআরসি এবং নাগরিক সংশোধনী একসঙ্গে খুবই বিপজ্জনক। এ কথা তিনিও মেনেছেন।’’
তবে সংসদে সিএবি-কে সমর্থন জানানো ছাড়া নীতীশ কুমারের আর কোনও উপায় ছিল না বলে জেডিইউ সূত্রে খবর। বলা হচ্ছে, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর পর বিহারে মুসলিম ভোট এখন লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) কব্জায়। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার দিকেই ঝুঁকেছেন নীতীশ কুমার, যাতে হিন্দু ভোট কোনও ভাবেই এদিক ওদিক না হয়। এমন সময় প্রশান্ত কিশোরের মতো নেতারা বেঁকে বসলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সময় থাকতেই সব দিক সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।