ফাইল চিত্র।
গত জানুয়ারিতেই জেডিইউ থেকে তাঁকে বার করে দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আজ পটনায় বসেই জেডিইউ প্রধানকে কার্যত তুলোধোনা করলেন ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। নীতীশের বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতা’, ‘লেজুড়বৃত্তি’র অভিযোগ তো তুললেনই, সেই সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে বিতর্কে বসার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রশান্ত। এই ভোট-কৌশলীর কথায় গুরুত্ব না-দিয়ে জেডিইউয়ের পাল্টা, রাজনীতি নয়, উনি বরং ব্যবসা করুন।
পটনায় প্রশান্ত আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন। শুরুতে অবশ্য তিনি তেমন আক্রমণাত্মক ছিলেন না। বরং প্রশান্ত জানান, নীতীশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ‘পিতা-পুত্রে’র। তাঁর কথায়, ‘‘নীতীশ কুমার আমাকে ছেলের মতো দেখেন। আমি তাঁকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাকে দলে রাখবেন কি না, সেটা তাঁর ব্যাপার।’’ এর পরেই সুর চড়াতে শুরু করেন প্রশান্ত। জেডিইউয়ের বিজেপি সঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘নীতীশজি সবসময় বলতেন গাঁধী, জেপি এবং লোহিয়ার আদর্শ তিনি ছাড়তে পারবেন না... তা হলে তিনি কী ভাবে সেই সব লোকজনের সঙ্গে রয়েছেন, যাঁরা গডসের আদর্শে বিশ্বাসী? এই দুই আদর্শ কখনও পাশাপাশি থাকতে পারে না।’’ ওই ভোট-কৌশলী জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা সহমতে
পৌঁছতে পারেননি। এর জবাব দিতে দেরি করেনি জেডিইউ। দলের মুখপাত্র কে সি ত্যাগীর তির্যক মন্তব্য, ‘‘উনি আম আদমি পার্টির হয়ে কাজ করুন। রাজনীতিটা ওঁনার জায়গা নয়, তার চেয়ে বরং নিজের ব্যবসায়
সময় দিন।’’
বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়েছিল নীতীশের জেডিইউ। সেই প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রশান্ত আজ বলেন, ‘‘বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীকে চরম আক্রমণ করলেন নীতীশ, আর সদ্যসমাপ্ত দিল্লি ভোটে তিনিই অমিত শাহ, জে পি নড্ডাদের সঙ্গে প্রচার করলেন। তাঁদের নেতা লেজুড়বৃত্তি করেছেন, এটা বিহার সহ্য করবে না।’’ নীতীশকে আক্রমণের পরে নিজের পরবর্তী কর্মসূচিও আজ জানিয়েছেন প্রশান্ত। চলতি বছরের শেষে বিহারে বিধানসভার ভোট। প্রশান্ত জানান, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ‘বাত বিহার কি’ নামে একটি কর্মসূচি শুরু করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিহারের অবস্থা বদলাতে ১০ হাজার ভাল মুখিয়া তৈরি করতে চাই।’’ এর জন্য তিনি রাজ্যের আট হাজার আটশো পঞ্চায়েতকে টার্গেট করেছেন। তাঁর দাবি, এখনই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রায় তিন লক্ষ মানুষ।