প্রকাশ কারাট। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাকিস্তান নীতির বিরোধিতায় এ বার সরব হল সিপিএম। দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য প্রকাশ কারাটের মতে, সরকারের উচিত সংঘাতের মনোভাব ছেড়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে ফের শান্তি আলোচনা শুরু করা।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্রের সর্বশেষ সংখ্যায় কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন কারাট। তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার সব পথ বন্ধ করে দিয়ে নিজেরাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কারাটের কথায়, সংঘাতের পথ থেকে সরকারকে সরে আসাটা সবার আগে দরকার। মনে রাখতে হবে, একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে শান্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে। সুতরাং সরকারের উচিত ইসলামাবাদের সঙ্গে একটি সার্বিক শান্তি আলোচনা শুরুর বিষয়ে তৎপর হওয়া।
প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের মন্তব্যের উল্লেখ করে প্রকাশ কারাট বলেছেন, তিনি দাবি করেছিলেন— সার্জিকাল স্ট্রাইকের মতো আক্রমণাত্মক জবাব দিলেই একমাত্র নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা থামানো যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এখনও রোজই নিয়ন্ত্রণ রেখা ও সীমান্তে গোলাগুলি বর্ষণ চলছে। সার্জিকাল স্ট্রাইকের পরেও সেনাঘাঁটি ও বিএসএফ-এর শিবিরে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। কারাট তথ্য দিয়ে দেখিয়েছেন, ২০০৩-এ ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষ-বিরতি কার্যকর করার পরে ২০১৭-এ সব চেয়ে বেশি তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি হিসেবই বলছে, গত বছরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ৮৬০ বার সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, আর সীমান্তে ১২০ বার। এর পরেও ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪০০-রও বেশি বার সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন হয়েছে।
এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের নীতিকেই দায়ী করেছেন কারাট। তাঁর কথায়, মোদী সরকার একমাত্রিক নীতি নিয়ে রাজ্যে সব ধরনের ক্ষোভ-বিক্ষোভের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আলোচনার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও সামরিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সরকার এই সমস্যাকে দেখার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
কারাটের দাবি, সরকার এখনই সংঘাতের পথ ছেড়ে পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে ইসলামাবাদের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু করুক। সেই সঙ্গে সীমান্তপারের অনুপ্রবেশ রোধে কড়া বন্দোবস্ত জারি থাকুক। কারণ তাঁর কথায়, মনে রাখতে হবে একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই কাশ্মীর সমস্যা সমাধান সম্ভব।