প্রভাত ঝা।—ফাইল চিত্র।
একটি দু’টি নয়। এক ডজনেরও বেশি টুইটে রীতিমতো ঝড়। আর সবগুলিই ‘ট্যাগ’ করা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে।
অমিত শাহের জাতীয় টিমের সহ-সভাপতি তিনি। পঞ্জাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের দায়িত্বে। এক সময় মধ্যপ্রদেশে দলের সভাপতিও ছিলেন। বিজেপির মুখপত্র ‘কমল সন্দেশ’-এর সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন। এখন রাজ্যসভার সদস্যও। প্রভাত ঝা।
তিনি টুইটে লিখেছেন কারও উদ্দেশে। যে গুলির নির্যাস অনেকটা এ রকম— ‘‘যখন কোনও ব্যক্তির নাম হয়, তখনই বদনাম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যে ডালে বেশি ফল হয়, সেটিই ভেঙে পড়ে।… যেন মনে না হয়, আমিই সব চেয়ে বেশি বুঝি। অন্যরাও বোঝেন। ফারাক শুধু আপনি সুযোগ পেয়েছেন, অন্যরা পাননি।…. কেউ কেউ মানুষ হয়েও নিজেকে ভগবান ভাবেন। যিনি নাটক করেন, তাঁর মুখোশও খুলে যায়।…. কারও সম্মান নিয়ে খেলা করা উচিত নয়, কাল আপনাকেও ভুগতে হতে পারে।… দায়িত্ব পাওয়া মানেই ‘শুধু আমি’ হওয়া উচিত নয়…।’’
গত কাল প্রভাত ঝা-র এই টুইট-ঝড়ের পর থেকেই বিজেপিতে শোরগোল পড়ে যায়, দলের এই প্রবীণ নেতা আসলে কাকে নিশানা করতে চাইছেন? মোদী, শাহ, নড্ডা, শিবরাজকে? কারণ, তাঁদেরকেই ‘ট্যাগ’ করে তিনি এই ধারাবাহিক টুইট করেছেন। কেউ কেউ তাঁকে ফোনও করেন। কিন্তু কারও কারও ফোন তিনিও ধরেনওনি। তা হলে কী বিদ্রোহী হলেন? কারণ, বিরোধীরা মোদী ও এই নেতাদের সম্পর্কে যে সব অভিযোগ করেন, অনেকটা সেই ভাষাতেই আক্রমণ করেছেন ঝা! বিজেপির এক নেতা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আসলে প্রভাতের ক্ষোভ হতে পারে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদ থেকে সদ্য সরে যাওয়া রামলালের উপর। হতে পারে তাঁর বিদায়ের পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রভাত।’’
প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপি সভাপতি বরাবর দলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার কথা বলেন। গিরিরাজ সিংহদের মতো বেফাঁস কথা সচরাচর বলেনও না বিজেপির এই সহ-সভাপতি। বিজেপি সূত্রের মতে, প্রকাশ্যে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার বার্তা দেওয়া হয় দলের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। কেউ কিসের ভিত্তিতে বিতর্কিত টুইট করেছেন, সেটি তাঁকেই ব্যাখ্যা করতে বলা হয়।
দলের চাপের মুখে প্রভাত ঝা আজ ফের টুইট করেই যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দাবি, গত কালের টুইটগুলির যে বক্তব্য, সে সব কথা দলের প্রবীণদের থেকেই শোনা। আর যদি কাউকে নিশানা করাই হয়, সেটি কংগ্রেসই হবে। কারণ, তিনি বরাবরই কংগ্রেসের আদর্শের বিরোধী। এই বলে পরের টুইটগুলিতে মোদীর প্রশংসাও করেছেন ঝা। জানিয়েছেন, কী করে সংগঠনের দায়িত্বে থাকার সময় মোদী জনসঙ্ঘের প্রবীণ নেতাদের সম্মান জানাতেন।
কিন্তু বিজেপি নেতার এই যুক্তি কারও হজম হচ্ছে না। ফলে রহস্য এখনও জিইয়ে রয়েছে।