ডাকবাক্স প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটারেরও দেখা মেলে না আজকাল। মানুষ চিঠি পাঠানো ভুলছে বলে কমছে ডাকটিকিটের ব্যবহারও। তাই বলে আগ্রহ কমেনি ডাকটিকিট সংগ্রহকারীদের। গত শুক্রবার শিলচর বঙ্গভবনে দু’দিনের ডাকটিকিট প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেন অন্তত ৩০ জন। বিভিন্ন বয়স-পেশার নারী-পুরুষ তুলে ধরেন নিজেদের সংগ্রহকে। উনবিংশ শতক থেকে আজকের দিন পর্যন্ত কত জায়গার কত ধরনের ডাকটিকিট তাঁদের সংগ্রহে!
শিলচরে দশ বছর আগে প্রথম ডাকটিকিট প্রদর্শনী হয়েছিল। এটি দ্বিতীয়। উদ্বোধন করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দিলীপচন্দ্র নাথ। সঙ্গে ছিলেন ডাকবিভাগের অসম সার্কলের ডিরেক্টর ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় ও সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট বিমল কিশোর। দু’টি পোস্টাল কভারের উন্মোচন করেন উপাচার্য। একটি বঙ্গভবনের ছবি সংবলিত, অন্যটি বরাক ব্লাড ব্যাঙ্ক অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের। দুই প্রতিষ্ঠানের তরফে তৈমুর রাজা চৌধুরী ও প্রদীপ বণিক ডাককর্তাদের ধন্যবাদ জানান। গত কাল ডাকটিকিট সংগ্রহ নিয়ে কর্মশালা আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখেন বিশাল সাঙ্গানারিয়া ও সম্পত শেঠি। পরে সমস্ত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। ডাকটিকিট প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন সুমন দেব। দ্বিতীয় দেবোপম বিশ্বাস ও দেবতনু বিশ্বাস। তিন জনকে তৃতীয় স্থানাধিকারী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন অপ্রতীম নাগ, রনি ঘোষ ও সুমনকুমার দাস।
ভাষাশহিদ কমলা ভট্টাচার্যের নামে ডাকটিকিট প্রকাশের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। পোস্টাল ডিরেক্টর ঋজু গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে একই দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন স্মারকপত্র পেশ করেছে। শ্যামাপ্রসাদ রোড মহিলা কমিটির পক্ষে বীথিকা আচার্য ও বন্দনা আচার্য, নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের পক্ষে চন্দ্রিমা দত্ত ও জয়শ্রী কর জানান, ১৯৬১ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনে কমলা ভট্টাচার্য শহিদ হয়েছেন। তিনিই ভাষার জন্য বিশ্বের প্রথম মহিলা শহিদ। তাঁরা যে ২০১১ সালে শিলচরের শ্যামাপ্রসাদ রোডে কমলা ভট্টাচার্যের আবক্ষ মূর্তি বসিয়েছেন, সে কথারও উল্লেখ করেন। তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিটের দাবি জানায় দ্বিজেন্দ্র-ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্টও। পৃথক স্মারকপত্রে ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, কমলা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা একই দাবি পেশ করে।