ফাইল চিত্র
এমসে আজ শেষ হল ৬-১২ বছর বয়সিদের করোনার টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই এই পরীক্ষার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সন্তানদের টিকাকরণ করিয়ে নিতে চাইছেন বহু বাবা-মা। তাই অনেকেই এসেছিলেন নয়াদিল্লির হাসপাতালে।
দেশে ছোটদের সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই ভারত বায়োটেকের টিকা কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে এমসের দিল্লি ও পটনা শাখা। গত ৭ জুন এমসের দুই শাখাতেই ১২-১৮ বছরের কিশোর-কিশোরীদের উপরে প্রথম বার ওই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়। দিল্লি এমসের মিডিয়া কোঅর্ডিনিটর বিশ্বনাথ আচারিয়া বলেন, ‘‘প্রথম পর্বে আমাদের হাসপাতালে প্রায় তিরিশ জন কিশোর-কিশোরী পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নেয়। এক সপ্তাহ পরে তারা সকলেই সুস্থ রয়েছে।’’ প্রথম পর্বটি ভাল ভাবে উতরে যাওয়ায় গত কাল ও আজ ছিল দ্বিতীয় পর্ব। দু’দিনে ৬-১২ বছরের প্রায় একশো জন খুদেকে কোভ্যাক্সিন টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের কারও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা শারীরিক সমস্যা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী সপ্তাহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় ধাপে হবে ২-৬ বছরের শিশুদের টিকাকরণ। সূত্রের মতে, প্রথম ডোজ় নেওয়ার তিন সপ্তাহ পরে এই খুদেদের শরীরে কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তা জানার পরেই এদের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এমস কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা ছিল, টিকা নিয়ে নানা ধরনের গুজবের কারণে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য কমবয়সিদের জোগাড় করতে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, এমসের চিকিৎসক ও কর্মীদের পরিবার ছাড়াও আমজনতা উৎসাহের সঙ্গে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নিতে এগিয়ে এসেছে। বিশ্বনাথ আচারিয়ার কথায়, ‘‘দেশে তৃতীয় ঢেউয়ে শিশু ও কমবয়সিরা বেশি আক্রান্ত হবে, এমন আশঙ্কা থেকেই সম্ভবত বাবা-মায়েরা চাইছেন, তাঁদের সন্তানেরা যাতে আগেভাগেই টিকা পেয়ে যায়।’’ একাধিক বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, তৃতীয় ঢেউয়ে ছোটদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও ওই যুক্তি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল। তাঁর ব্যাখ্যা, প্রথম ধাক্কায় বয়স্করা, দ্বিতীয় ধাক্কায় তরুণ ও মধ্যবয়স্কেরা বেশি আক্রান্ত হওয়ায় অনেকেই ভাবছেন, এখনও পর্যন্ত ছোটদের মধ্যে সংক্রমণ কম ছড়িয়েছে বলে তৃতীয় ধাক্কায় তাদেরই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুরা বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়েছে। গত দু’টি ঢেউয়ে সংক্রমিতদের মধ্যে ১-২০ বছর বয়সির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১১.৩১% এবং ১১.৬২%। তবে এদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। দ্রুত সুস্থও হয়ে উঠেছে ছোটরা। অল্প সংখ্যক শিশুকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।